কাবুলে ৩ হাজার সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

কাবুলে ৩ হাজার সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কূটনীতিক ও সহযোগীদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ কাজে সহায়তার জন্য সেখানে পাঠানো হচ্ছে ৩ হাজার যুক্তরাষ্ট্র সেনা। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার এমন সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগ।

যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ন্যাড প্রাইস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অতিরিক্ত এই সেনাদের কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে মোতায়েন করা হবে।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র নাগরিকদের উপস্থিতি কমিয়ে আনা হবে। এ ছাড়া দূতাবাসে ন্যূনতম কূটনীতিকদের রেখে অন্যদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সেনাসদস্যদের পাঠানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ঠিক কতজনকে কাবুল থেকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে, তা নিশ্চিত করেননি যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র। তবে দূতাবাসটিতে কতজন কাজ করছেন, তার একটি ধারণা দিয়েছে সংবাদমাধ্যম পলিটিকো। তাদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জুলাইয়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অধীনে প্রায় ৮ হাজার জন কাজ করছেন বলে তথ্য রয়েছে। কূটনীতিক ছাড়াও দূতাবাসে কাজ করছেন ঠিকাদার এবং আফগানিস্তানের নাগরিকেরা। ৮ হাজার জনের মধ্যে ১ হাজার ৪০০ জন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।

মুখপাত্র ন্যাড প্রাইস জানান, যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সঙ্গে কথা বলেছেন। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা সমন্বয় করা এই আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল।

এদিকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়া হলেও আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বন্ধ হচ্ছে না বলে জোর দিয়ে জানিয়েছেন ন্যাড প্রাইস। কনস্যুলার সার্ভিসসহ অন্য কার্যক্রম চালাতে দূতাবাস চালু থাকবে বলেই এখন পর্যন্ত জানানো হয়েছে। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে এবং পরিস্থিতির প্রতিনিয়ত মূল্যায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আফগানিস্তানে নাজুক পরিস্থিতি মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস কাবুল বিমানবন্দর এলাকায় স্থানান্তর করা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নও করা হয়। তবে এর সরাসরি কোনো জবাব দেননি পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র।

এর আগে গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, আফগানিস্তান থেকে চূড়ান্তভাবে যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি ভুল করেননি। এ নিয়ে তাঁর কোনো অনুশোচনা নেই। তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানে এক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থ ব্যয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘ যুদ্ধে হাজার হাজার মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে আরও কয়েক হাজার মার্কিন সেনাকে। আফগান সরকার এবং সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। এখন আফগানিস্তানের জনগণকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজ স্বার্থে দেশের জন্য লড়াই করতে হবে।