গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা, রেহাই মেলেনি শিশুদেরও

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা, রেহাই মেলেনি শিশুদেরও

গাজা, ৯ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাজধানী হিসেবে মার্কিন স্বীকৃতির প্রতিবাদে ক্ষোভ পালনের দিনে পৃথিবীর বৃহত্তম উন্মুক্ত কারাগারখ্যাত গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হামাসের রকেট হামলার প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার ওই হামলা হয়েছে বলে দাবি করেছে তেল আবিব। ওই হামলায় বেশ কয়েকজন শিশু আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

শুক্রবারের ওই বিক্ষোভে ফিলিস্তিনজুড়ে ৭০০ মানুষের আহত হয়েছে। এদিন ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে গাজা উপত্যকায় ২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। কাতারভিত্তিক আলজাজিরা, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এবং মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর খবর থেকে এসব কথা জানা গেছে।

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতির প্রতিবাদে শুক্রবার অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় ক্ষোভ দিবসে’ পালিত হয় । ইসরায়েলি বাহিনী বলপ্রয়োগে ওই বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। শুধু গাজা উপত্যকাতেই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত দুইজন।

গাজা সীমান্তের কাছে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ৩০ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিন নিহত হওয়ার পর গুলিতে নিহত হন ৫৮ বছর বয়সী আরেকজন। এদিকে ফিলিস্তিনের গাজা শহরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ছয় শিশুসহ কমপক্ষে ২৫ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। গাজা উপত্যকার শাসক দল হামাসের রকেট হামলার জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে এ বিমান হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে রাশিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরটি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে আইডিএফ জানায়, শুক্রবার হামাসের রকেট হামলার জবাব দিতে গাজায় এ হামলা চালানো হয়েছে। হামাসের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও অস্ত্রাগার এ হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল। এ সময় বিমান হামলায় আহতদের জন্য হামাসকেই সম্পূর্ণ দায়ী করে আরডিএফ। ইসরায়েল দাবি করে, শুক্রবার প্রথমে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিনটি রকেট ছোঁড়ে হামাস। তবে ওই রকেট হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা জানা যায়নি।

ফিলিস্তিনি নেতারা শুক্রবার ইন্তিফাদার ডাক দেওয়ার সহিংসতার আশঙ্কায় ইসরায়েল পশ্চিম তীরে আগে থেকেই অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছিল। পূর্ব জেরুজালেমে ওল্ড সিটির বাইরে পুলিশ শত শত বিক্ষোভকারীকে হটিয়ে দিতে গেলে ধস্তাধস্তি হয়।

টিভিতে প্রচারিত দৃশ্যে বেথলেহেমে পাথর ছুড়ে মারা ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ওপর ইসরায়েলি সেনাদেরকে জলকামান ব্যবহার করতে দেখা গেছে। সেনাদের টিয়ারগ্যাস আর বিক্ষুব্ধ ফিলিস্তিদের টায়ার পোড়ানোয় ঘন কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় চারিদিক। ইসরায়েলি সেনারা বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেটও ছুড়েছে। অন্যান্য যেসব স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে সেসব জায়গাতেও দেখা গেছে একই দৃশ্য।

গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে সংঘর্ষে অন্তত ৭০০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।

জেরুজালেম নিয়ে ট্রাম্পের বিতর্কিত ঘোষণায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তার নীতির পরিবর্তনকে ইসরায়েল স্বাগত জানালেও আরব এবং মুসলিম বিশ্ব নিন্দা জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোও কয়েকদশকের নীতি বদলে দেওয়ার এ পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছে।

ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিশ্বের অন্যান্য জায়গাতেও বিক্ষোভ হচ্ছে। জর্ডান, মিশর, ইরাক, তুরস্ক, তিউনিশিয়া এবং ইরানে ফিলিস্তিনপন্থি হাজার হাজার বিক্ষোভকারী বিক্ষোভ করেছে। মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়ার মত মুসলিমপ্রধান বিভিন্ন দেশেও বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১১৪৪ঘ.)