বরিস-ম্যাক্রোঁ'র বাকযুদ্ধ

বরিস-ম্যাক্রোঁ'র বাকযুদ্ধ

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশী ইস্যুতে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধভাবে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে অবস্থান করা অভিবাসীদের ফিরিয়ে নিতে ফ্রান্সের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যে চিঠি লিখেছেন তাতে চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি অভিযোগ করেন, এ ঘটনা নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বই দিচ্ছেন না।

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ফরাসি প্রেসিডেন্টকে ওই চিঠিতে যুক্তরাজ্যে অবস্থান নেওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফিরিয়ে নিতে বলেছেন। এছাড়া ইংলিশ চ্যানেলে এই ধরণের বিপর্যয় এড়াতে পাঁচটি পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেন বরিস। তিনি বলেন, ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়াদের ফিরিয়ে নিতে ফ্রান্স একমত হলে ফের একই ধরনের বিপর্যয় এড়াতে এর ‘তাৎক্ষণিক ও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব’ থাকবে।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বরিসের চিঠিটি ভালোভাবে নেয়নি প্যারিস। জবাবে অভিবাসন ইস্যুতে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করে দিয়েছেন ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন। এতে ঘটনা আরও জটিল রূপ নিয়েছে।

পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস। তিনি বলেন, ‘এই সমস্যা আমাদেরকেই সমাধান করতে হবে’।

এদিকে রবিবারের অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যুক্তরাজ্য ছাড়াও বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি এবং ইউরোপিয়ান কমিশনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ফ্রান্স। কিন্তু প্যাটেলের আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করা হলে বাকিদের নিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের সৃষ্ট সংকট নিরসনে আলোচনা হবে বলে সাফ জানিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি এ-ও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের চিঠি ফ্রান্সকে চরম হতাশ করেছে এবং চিঠিটি সবার সামনে প্রকাশ করায় ভালো হয়নি।

এ ঘটনায় শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ম্যাক্রোঁ বলেন, আমি আমার দিক থেকে আলোচনার চেষ্টা করেছি, অন্য দেশের নেতাদের সঙ্গে যা করে থাকি। কিন্তু আমি খুবই অবাক হয় যখন তাদের (যুক্তরাজ্য) দিক থেকে গুরুত্ব দেয় না।

তিনি আরও বলেন, 'এসব ইস্যুতে যেসব টুইট ও চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে সেগুলোর ভিত্তিতে আমরা নেতারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করি না। আমরা তথ্য ফাঁসকারী নই'।

উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে বিভক্ত করা ইংলিশ চ্যানেলে গত বুধবার অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফরাসি কর্মকর্তারা প্রথমে ৩১ জনের মৃত্যুর কথা জানালেও পরে তারা ২৭ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন। নৌকাডুবিতে সংশ্লিষ্টতায় চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।