জেরুজালেমকে বাদ দিয়ে কোনো শান্তি পরিকল্পনা মেনে নিব না : ফিলিস্তিনি

জেরুজালেমকে বাদ দিয়ে কোনো শান্তি পরিকল্পনা মেনে নিব না : ফিলিস্তিনি

ওয়াশিংটন, ১৭ এপ্রিল (জাস্ট নিউজ) : ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে পূর্ব জেরুজালেমকে অন্তর্ভুক্ত করা না হলে ট্রাম্প প্রশাসনের কোনো ধরনের শান্তি পরিকল্পনাকে ফিলিস্তিনিরা গ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত হোসাম জোমলট।

সোমবার ‘জে স্ট্রিট’ কনফারেন্সে দেয়া ভাষনে তিনি এই কথা বলেন।

‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসী’ ইহুদিদের এমন একটি গ্রুপের বার্ষিক সম্মেলনে দেয়া ভাষনে জোমলট বলেন, ‘শান্তি ও আত্মনির্ভরতা অর্জনের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনমনীয়। ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী করে ‘দুই রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠা করাই উদ্বাস্তুদের সমস্যার একমাত্র সমাধান।’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানা অনুযায়ী, আমাদের এই দৃষ্টিভঙ্গিতে ইসরাইল রাষ্ট্রকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; যাতে চূড়ান্ত সুরক্ষা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আমাদের সঙ্গে তাদের প্রতিবেশীর সম্পর্ক থাকে।’

ট্রাম্প প্রশাসনের আসন্ন শান্তি পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, একটি ‘রাষ্ট্রকে মাইনাস’ বা ‘আঞ্চলিক সীমানা রাষ্ট্র’কে ফিলিস্তিনিরা গ্রহণ করবে না।

জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন স্বীকৃতির সিদ্ধান্তকে ফিলিস্তিনিরা প্রত্যাখ্যান করেছে- তা পুনব্যর্ক্ত করে তিনি বলেন, ‘এর কারণ এটি শান্তি প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে না। জেরুজালেম হচ্ছে শান্তির মূল। জেরুজালেম হচ্ছে দুই রাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রাণ-কেন্দ্র। জেরুজালেম ছাড়া দুই রাষ্ট্রীয় সমাধান হতে পারে না। মার্কিন সিদ্ধান্তটি শান্তির বিপরীত।’

জোমলট বলেন, ‘জেরুজালেমকে কেউ একচেটিয়া দাবি করতে পারে না। আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে আমরা কেবল জেরুজালেমে ইহুদি সংযোগকে স্বীকৃতিই দেব না, আমরা এটি উদযাপনও করব।’

তিনি বলেন, মার্কিন সিদ্ধান্তে জেরুজালেমের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। একমাত্র পরিবতনটি হচ্ছে-জেরুজালেমের অবস্থা নিয়ে সেখানে মধ্যস্থতাকারীর পরিবর্তন হয়েছে।

গত বছরের ৬ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস বা জেরুজালেম শহরকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। এরপর তিনি ঘোষণা করেন, তেল আবিব থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস শহরে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেয়া হবে। ট্রাম্পের এ ঘোষণার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।

এরপর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ১২৮টি দেশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে বাতিলের দাবিতে তোলা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।

তবে ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে আমেরিকা ও ইসরাইলসহ নয়টি দেশ ভোট দেয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভোটের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হুমকি দিয়েছিলেন, যেসব দেশ আমেরিকার বিরুদ্ধে ভোট দেবে তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক সাহায্য বাতিলসহ নানা ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১৫৫৫ঘ.)