১২ জুনই কিমের সঙ্গে বৈঠক : ট্রাম্প

১২ জুনই কিমের সঙ্গে বৈঠক : ট্রাম্প

ঢাকা, ২ জুন (জাস্ট নিউজ) : উত্তর কোরিয়ার উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক শেষে দেশটির শীর্ষ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে চলতি মাসের ১২ তারিখেই বৈঠক হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

পিয়ংইয়ংয়ের ‘প্রকাশ্য শত্রুতা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া’কে দায় দিয়ে সপ্তাহখানেক আগে সিঙ্গাপুরে প্রস্তাবিত বৈঠকও তিনিই বাতিল করেছিলেন।

উত্তর কোরিয়া বৈঠক অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আগ্রহ দেখালে নতুন করে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়। তারই অংশ হিসেবে মে-র শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন কিমের ‘ডানহাত’ খ্যাত কিম ইয়ং-চোল।

শুক্রবার তার সঙ্গে বৈঠকের পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট আগের নির্ধারিত তারিখে কিমের সঙ্গে বৈঠকের কথা নিশ্চিত করেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

‘১২ জুন সিঙ্গাপুরেই আমরা বৈঠক করবো। ঠিকঠাক মতোই সব হচ্ছে। আমরা তাদের জনগণ সম্বন্ধে ভালো করে জানতে পারবো’, চোলের সঙ্গে বৈঠকের পর হোয়াইট হাউজের লনে সাংবাদিকদের বলেন ট্রাম্প।

বৈঠকে চোল উত্তরের শীর্ষ নেতার একটি চিঠিও মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতে পৌঁছে দেন।

তাৎক্ষণিকভাবে ওই চিঠিকে ‘খুবই কৌতুহল উদ্দীপক’ বললেও ট্রাম্প পরে জানান তিনি এখনো কিমের চিঠিটি খুলে দেখেননি।

সিঙ্গাপুরের বৈঠকে কোরীয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি নিয়ে আলোচনার হতে পারে বলেও জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ১৯৫০-৫৩ সাল পর্যন্ত চলা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দুই কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি চললেও কোনো শান্তিচুক্তি হয়নি।

এপ্রিলে উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনেও কিম ও মুন দুই কোরিয়ার মধ্যে শান্তিচুক্তির ব্যাপারে জোর দিয়েছিলেন।

উত্তরের শীর্ষ নেতার সঙ্গে প্রথম বৈঠকেই পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে চুক্তি হয়ে যাবে, এমন আশা না করতেও পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প।

“কখনোই বলিনি এক বৈঠকেই সব হয়ে যাবে। আমার মনে হয় এটি একটি পদ্ধতি। যদিও সম্পর্ক গড়ে উঠছে, এবং এটি খুবই ইতিবাচক,” বলেছেন তিনি।

সিঙ্গাপুরে নির্ধারিত তারিখে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলে, এটি হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উত্তরের কোনো শীর্ষ নেতার প্রথম বৈঠক।

পিয়ংইয়ং ‘পারমাণবিক অস্ত্র’ ত্যাগ করলে উত্তরের অর্থনীতি পুনর্গঠনে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এদিকে কিমও বলছেন তিনি ‘অ-পারমাণবিকীকরণে’ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যদিও কীসের বিনিময়ে, তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রভাবশালী কর্মকর্তারা উত্তর কোরিয়ার ‘অ-পারমাণবিকীকরণের’ ক্ষেত্রে ‘লিবিয়ার পথ’ অনুসরণ করা হতে পারে এমনটা বলার পর চলতি মাসের মাঝামাঝি কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল পিয়ংইয়ং।

২০০৩ সালে লিবিয়া পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচী ত্যাগ করার অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কও পুনঃস্থাপিত হয়। আট বছর পর নেটো সমর্থিত বিদ্রোহী ও আধাসামরিক গোষ্ঠীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত হন দেশটির নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি। নেটো সমর্থিত বিদ্রোহীদের হাতে ধরা পড়ার পর গাদ্দাফিকে হত্যাও করা হয়।

লিবিয়া মডেলের উদাহরণ উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনকে আতঙ্কিত করতে পারে বলে তখনই ধারণা করেছিলেন পর্যবেক্ষকরা।

পিয়ংইয়ংয়ের কড়া প্রতিক্রিয়ার পাল্টায় বৈঠক থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। পরে দুই পক্ষই বৈঠক আয়োজনে নতুন করে আগ্রহ দেখালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠক নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

জাস্ট নিউজ/এমআই/১১৪০ঘ.)