৭ লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়া হবে: মিয়ানমার সরকারের উপদেষ্টা

৭ লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়া হবে: মিয়ানমার সরকারের উপদেষ্টা

ঢাকা, ২ জুন (জাস্ট নিউজ) : মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সাত লাখ রোহিঙ্গার সবাই যদি স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যেতে চায় তাহলে সবাইকে ফিরিয়ে নিতে রাজি বলে জানিয়েছেন মিয়ানমার সরকারের একজন উপদেষ্টা।

শনিবার সিঙ্গাপুরে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্মেলন শাংরি-লা সংলাপে মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন এমন মন্তব্য করেছেন । বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে

২০১৭ সালের ২৫ আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর সেখানকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-নীপিড়ন শুরু করে সেনাবাহিনী। মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইনে সেনাবাহিনীর অত্যাচারে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এসব পালিয়ে আসা ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের প্রতি অব্যাহত চাপ প্রয়োগ করে আসছে। উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে প্রত্যাবাসন চুক্তিও। তবে রোহিঙ্গারা কবে নিজ দেশে ফিরতে পারবে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এতদিন মিয়ানমার বলে আসছিল, যেসব রোহিঙ্গা নিজেদের দেশটির বাসিন্দা হিসেবে প্রমাণ দিতে পারবে কেবল তাদেরকেই ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

নিরাপত্তা সম্মেলনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি কি মিয়ানমারকে জাতিসংঘের আরটুপি (রেসপন্সসিভিলিটি টু প্রটেক্ট) ফ্রেমওয়ার্ক চালুর দিকে নিয়ে যাবে? কথিত এই আরটুপি ফ্রেমওয়ার্কটি ২০০৫ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে গ্রহণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নিধনযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে নিজ দেশের জনগণকে রক্ষা এবং এই প্রতিশ্রুতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে এক দেশ অন্য দেশকে সহযোগিতা করবে।

জবাবে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, স্বেচ্ছায় যদি ৭ লাখকে ফেরত পাঠানো যায় তাহলে আমরা তাদের সাদরে গ্রহণ করব। এটাকে কি জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলা যায়?

মিয়ানমারের উপদেষ্টা আরো বলেন, সেখানে কোনো যুদ্ধ চলছে না, তাই এটা যুদ্ধাপরাধ নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়টি কিছুটা বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু আমাদের অকাট্য প্রমাণ লাগবে। এই গুরুতর অপরাধ প্রমাণিত হতে হবে এবং তা নিয়ে হালকাভাবে আলোচনা করা উচিত নয়।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এই নিপীড়নকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এই হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা করেছেন।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২০১৫ঘ.)