জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব, আগামী সপ্তাহে ভোট

‘জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা অবশ্যই বাতিল করতে হবে’

‘জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা অবশ্যই বাতিল করতে হবে’

নিউইয়র্ক, ১৭ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : জেরুজালেম ইস্যুতে কঠোর এক অবস্থানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে এ বিষয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে। তাতে বলা হয়েছে, জেরুজালেমের মর্যাদার প্রশ্নে কোনো সিদ্ধান্ত বা ঘোষণার কোনো আইনগত কার্যকারিতা নেই এবং জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণাও অবশ্যই বাতিল করতে হবে।

এক্ষেত্রে ওই প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করলেও পরিষ্কার বোঝা যায়, তিনি গত ৬ই ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা দিয়ে বিশ্বজুড়ে যে ক্ষোভ ছড়িয়ে দিয়েছেন, তাকে টার্গেট করেই ওই প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়েছে, এক পৃষ্ঠার ওই খসড়া প্রস্তাবটি প্রণয়ন করেছে মিশর।

শনিবারই তা নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের কাছে বিতরণ করা হয়েছে। ওই খসড়াটি দেখতে পেয়েছে রয়টার্স। এ প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে ব্যাপক সমর্থন পাবে বলে ধারণা করা হয়। এমন কথা বলেছেন কূটনীতিকরাও। তবে এতে ওয়াশিংটন ভেটো দেবে এটা চোখ বন্ধ করেই বলে দেয়া যায়। কারণ, ৬ই ডিসেম্বর বিশ্ববাসীর দৃষ্টিভঙ্গি উপেক্ষা করে, একতরফাভাবে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার এই ঘোষণায় শুধু সুবিধাভোগী ইসরাইল ছাড়া বিশ্বের আর একটি দেশও সমর্থন দেয় নি। আরব লীগ ও ওআইসি এ নিয়ে জরুরি বৈঠক করে ট্রাম্পের ওই ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

বলেছে, তার ওই ঘোষণা অবৈধ, বেআইনি। এর আইনগত কোনো বৈধতা নেই। একই সঙ্গে ওআইসি থেকে পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে বিশ্ববাসীকে এ ঘোষণায় সমর্থন দিতে আহ্বান জানানো হয়। এরই মধ্যে ফিলিস্তিনিদের গায়ে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে। তারা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে একের পর এক বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে শহীদ হচ্ছেন। এ পর্যন্ত দখলদার ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে কমপক্ষে আট জন ফিলিস্তিনি এভাবে শহীদ হয়েছেন।

উল্লেখ্য, মিশরের করা খসড়া ওই প্রস্তাবটি আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে ভোটে দিতে পারে নিরাপত্তা পরিষদ। এ কথা বলেছেন কূটনীতিকরা। তবে তা কার্যকর না হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। কারণ, একটি প্রস্তাব বা রেজুল্যুশন পাস হতে হলে এর পক্ষে কমপক্ষে ৯টি ভোট পড়তে হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, বৃটেন, রাশিয়া ও চীনের কেউ যদি ওই প্রস্তাবে ভেটো দেয় তাহলে প্রস্তাবটি পাস হয় না। ভেটো দেয়ার ক্ষমতাধর এই দেশগুলোর মধ্যে জেরুজালেম ঘোষণাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তারা এতে ভেটো দিলেই প্রস্তাবটির ইতি ঘটবে। প্রস্তাবে জেরুজচালেমে কূটনৈতিক মিশন বা দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানানো হয়েছে সব দেশের প্রতি।

উল্লেখ্য, জেরুজালেম প্রশ্নে ট্রাম্পের ঘোষণার পর আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব তোলার পক্ষে একমত হন। তাই বলা হচ্ছে, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো দেয়ার ক্ষমতা আছে এবং সে জন্য এ প্রস্তাবটি অনুমোদিত না হওয়ার আশঙ্কাই বেশি, তবে এর মাধ্যমে ট্রাম্প আরো বেশি একা হয়ে পড়বেন। এ বিষয়ে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মিশনের মন্তব্য চাওয়া হলে তারা কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়। ওদিকে এর আগে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১১৩০ঘ.)