জেরুজালেম ইস্যুতে জাতিসংঘে জরুরি অধিবেশন বৃহস্পতিবার

জেরুজালেম ইস্যুতে জাতিসংঘে জরুরি অধিবেশন বৃহস্পতিবার

নিউইয়র্ক, ২০ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : নিরাপত্তা পরিষদ ব্যর্থ হওয়ার পর জেরুজালেম ইস্যুতে জরুরি ও বিরল এক অধিবেশনে বসছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। আরব ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর অনুরোধে বৃহস্পতিবার ১৯৩ সদস্যের এই অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। এর আগে ৬ই ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তার ওই ঘোষণা বাতিল দাবিতে সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভোট হয়। তাতে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে ওই প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। নিরাপত্তা পরিষদে এমন ভাগ্য বরণ করবে প্রস্তাব এটা জানতেন ফিলিস্তিন, আরব ও মুসলিম দেশগুলো।

তাই আগেভাগেই নিরাপত্তা পরিষদের সাধারণ অধিবেশন আহ্বানের তাগিদ দেয়া হয়। সেই আহ্বানে বৃহস্পতিবার বসছে ওই জরুরি অধিবেশন। তবে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হলে তার যে প্রভাব বা ব্যাপকতা থাকতো তার সমান গুরুত্ব পাবে না সাধারণ অধিবেশনের প্রস্তাব। তবু এর মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বা যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা একপেশে হয়ে পড়তে পারেন বা তাদের ওপর চাপ বাড়তে পারে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এতে বলা হয়, জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর বলেছেন, ট্রাম্পের ঘোষণা প্রত্যাহার দাবি করে একটি খসড়া প্রস্তাব আনা হয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। তার ওপর ভোট হবে বৃহস্পতিবার।
উল্লেখ্য, সোমবার একই রকম প্রস্তাবের ওপর ভোট হয় নিরাপত্তা পরিষদে। সেখানে ভোট দেয়ার আগে বৃটেন, ফ্রান্স সহ অমুসলিম দেশগুলোও ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে। নিরাপত্তা পরিষদে সদস্য মোট ১৫ টি। এর মধ্যে স্থায়ী পরিষদের সদস্য ৫টি। এর একটিমাত্র দেশ যদি কোনো প্রস্তাবে ভেটো দেয় তাহলে সেই প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। সেই কাজটিই করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পরিষদের বাকি ১৪ টি দেশের সবাই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।

রিয়াদ মানসুর বলেছেন, তিনি গভীরভাবে আশাবাদী। তিনি মনে করেন সাধারণ পরিষদের ভোটে প্রস্তাবের পক্ষ্যে ব্যাপক সমর্থন পাবেন। এ ভোটের ফলে প্রস্তাব পাস হলে তা যে কাউকে আইনগতভাবে মেনে নিতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। তবে এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক চাপ বাড়বে। তবে এর আগেই মঙ্গলবার জাতিসংঘের কয়েক ডজন সদস্য রাষ্ট্রকে সতর্ক করে চিঠি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি। তার ওই চিঠিটি দেখতে পেয়েছে রয়টার্স। এতে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে সমালোচনাকারী ওই প্রস্তাবের পক্ষে যারা ভোট দেবে তাদেরকে নাম স্মরণে রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। নিকি হ্যালি লিখেছেন, সতর্কতার সঙ্গে এই ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন প্রেসিডেন্ট। তিনি আমাকে অনুরোধ করেছেন, যারা আমাদের বিরুদ্ধে ভোট দেবে তাদের বিষয়ে তাকে রিপোর্ট করার জন্য। তাই আমরা এই ইস্যুতে প্রতিটি ভোটের বিষয়ে নোট রাখবো। টুইটার পোস্টেও নিকি হ্যালি একই কথার প্রতিধ্বনি তুলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ওই নামগুলো টুকে রাখবে।

উল্লেখ্য, ১৯৫০ রেজুল্যুশনের অধীনে সাধারণ পরিষদের জরুরি অধিবেশন আহ্বান করা যাবে এমন বিষয়ে, যাতে মনে করা হয় সব সদস্য দেশের সম্মিলিত সুপারিশ যথাযথ হবে। অবশ্য যদি এক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়।

জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত মাত্র ১০ বার এমন অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। সর্বশেষ এমন অধিবেশন ডাকা হয়েছিল ২০০৯ সালে। দখলীকৃত পূর্ব জেরুজালেম ও ফিলিস্তিনি ভূখন্ড ইস্যুতে ওই অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার যে অধিবেশন হচ্ছে তা ওই অধিবেশনের ধারাবাহিকতা।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১৫ঘ.)