ইহ্সানকারীকে আল্লাহ ভালোবাসেন

ইহ্সানকারীকে আল্লাহ ভালোবাসেন

ইহ্সান মানুষের চরিত্রের মতো অমূল্য সম্পদ। ইহ্সানের গুণাবলির জন্যই মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। ইহ্সানের গুণাবলিসম্পন্ন মানুষকে আল্লাহ ভালোবাসেন। ইহ্সানকারীদের আল্লাহ ভালোবাসেন বলেই, তারা সমাজ রাষ্ট্রে স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে থাকেন। একজন মোমিনের দৈনন্দিন ব্যক্তিগত, পরিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইহ্সানের গুরুত্ব অপরিসীম। ইহ্সানের গুণাবলি একজন সাধারণ মানুষকে অনন্য মহৎ মানুষের স্বীকৃতি এনে দেয়। আল্লাহ তায়ালা একে অপরের প্রতি ইহ্সান করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ইহ্সান করো। কেননা আল্লাহ ইহ্সানকারীদের ভালোবাসেন।’ (সূরা বাকারা : ১৯৫)

যারা একে অপরের প্রতি ইহ্সান করবে, আল্লাহ তায়ালা ইহ্সানকারীদের সাথে দুনিয়া ও আখেরাতে থাকবেন। মহান আল্লাহ তায়ালা যদি কারো সাথে থাকেন, ইহকাল ও পরকাল কোথাও তার কোনো ভয় নেই। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ইহ্সানকারীদের সাথে আছেন।’ (সূরা আনকাবূত : ৬৯)
ইহ্সানের সাথে যারা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করবে, তারাই সফলকাম। ইহ্সানের গুণাবলি অর্জন করা ছাড়া কখনো একজন ব্যক্তি পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণকারী হতে পারবে না। এ জন্য তাসাউফ অনুশীলনকারী ব্যক্তিমাত্রই ইহ্সানকে পথ চলার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেন। তারা সদা-সর্বদা ইহ্সান প্রদর্শন করে থাকেন। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘ইহ্সানকারীরূপে যে ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে সে ব্যক্তি দৃঢ়ভাবে মজবুত হাতল ধারণ করেছে।’ (সূরা লুকমান :২২)

ইহ্সানের বিনিময়ে শুধুই ইহ্সান পাওয়া যাবে। যে ব্যক্তি অপরের প্রতি ইহ্সান করবে, আল্লাহ তার প্রতি ইহ্সান করবেন। যে ব্যক্তি অপরের প্রতি ইহ্সান প্রদর্শন করবে না, আল্লাহও ওই ব্যক্তির প্রতি ইহ্সান করবেন না। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘উত্তম কাজের জন্য উত্তম পুরস্কার ছাড়া আর কী হতে পারে?’ (সূরা রহমান : ৬০)

ইহ্সান আল্লাহর ভালোবাসা লাভের অনন্য উপায়। হজরত আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: এরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন তখন তিনি হজরত জিবরাইল আ:-কে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, অতত্রব তুমিও তাকে ভালোবাস। তখন হজরত জিবরাইল আ:ও তাকে ভালোবাসেন। এরপর হজরত জিবরাইল আ: আসমানবাসীদের মধ্যে ঘোষণা করে দেন, আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, সুতরাং তোমরাও তাকে ভালোবাস। তখন আসমানবাসীও তাকে ভালোবাসতে থাকে। এরপর পৃথিবীতেও তাকে গ্রহণ করার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।’ (বোখারি : ২৯৮২)। সুতরাং আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে আমাদের একে অপরের প্রতি ইহ্সান করতে হবে।

এমজে/