করোনার কারণে দেশের মসজিদগুলো আপাতত বন্ধ হচ্ছে না

করোনার কারণে দেশের মসজিদগুলো আপাতত বন্ধ হচ্ছে না

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সারা দেশের মসজিদগুলো আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। মসজিদগুলো খোলাই থাকবে। জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও জুমার নামাজও চলবে।

তবে করোনা সংক্রমণ থেকে নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত না করে কেউ যেন মসজিদে না যান, সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)। পাশাপাশি মসজিদে নামাজের জামাতে মুসল্লি সীমিত রাখতে বলেছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি।

বুধবার ইফার মহাপরিচালক (ডিজি) আনিস মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে ৪টি নির্দেশনা দেয়া হয়। এগুলো হল- ১. করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে এবং মানুষের ব্যাপক মৃত্যুঝুঁকি থেকে সুরক্ষার জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে সব ধরনের জনসমাগম বন্ধের পাশাপাশি মসজিদগুলো জুমা ও জামাতে মুসল্লিদের উপস্থিতি সীমিত রাখতে হবে। ২. মসজিদ বন্ধ থাকবে না, তবে করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত না করে কেউ মসজিদে আসবেন না। ৩. সরকার ও বিশেষজ্ঞদের সর্তকতার জন্য যে সব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে- তা মেনে চলার জন্য জনগণকে অনুরোধ করা হল। ৪. সবাই অপরাধমূলক কাজ-কর্ম থেকে বিরত হয়ে ব্যক্তিগতভাবে তওবা, ইস্তিগফার ও কুরআন তেলাওয়াত অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়।

কোকো প্রক্রিয়ায় মসজিদে নামাজের জামাতে মুসল্লি সীমিত রাখতে হবে তার কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়নি বিজ্ঞপ্তিতে। একই সঙ্গে করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত না হয়ে মসজিদে আসা যাবে না। তবে কীভাবে সুরক্ষা নিশ্চিত করে মুসল্লিরা মসজিদে যাবেন সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো পরামর্শ নেই।

এই বিজ্ঞপ্তি দেয়ার আগে মঙ্গলবার দেশের প্রখ্যাত আলেম-ওলামাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইফা ডিজি আনিস মাহমুদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের ভূমিপল্লী আবাসন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আহমাদুল্লাহ, আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কো-চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস, মারকাযুত দাওয়ার শিক্ষা সচিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক, শায়খ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মীযানুর রহমান সাঈদ, মিরপুরের জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুমের মুহতামিম মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী প্রমুখ।

‘সীমিত পরিসরে মসজিদে জামাত চলবে’ এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে মাওলানা আহমাদুল্লাহ বলেন, সীমিত পরিসরের ব্যাখ্যাটা হল এই, মসজিদের যারা স্টাফ (খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেম) আছেন, যেভাবে সৌদি আরবের মক্কা মদিনায় নামাজ চলছে তারা সেভাবে জামাতে নামাজ আদায় করবেন। মসজিদে বন্ধ থাকবে না, মসজিদে আজান হবে, নামাজের আনুষ্ঠানিকতা চলবে।

তিনি বলেন, আমরা কে সুস্থ, কে অসুস্থ এটা বোঝার কোনো উপায় নেই। যেহেতু আমাদের সুস্থতা-অসুস্থতা বোঝার কোনো উপায় নেই, অতএব আমরা বাসা-বাড়িতে নামাজ পড়ব। মসজিদের স্টাফরা জামাতে নামাজ পড়বেন, আর মসজিদের একেবারেই প্রতিবেশীদের মধ্যে যারা নিশ্চিত যে তিনি সুস্থ তারা আসবেন। ফাঁকা ফাঁকা হয়ে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবেন।

মাওলানা আহমাদুল্লাহ আরো বলেন, মূলকথা যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি সুস্থতা নিয়ে নিশ্চিত নন, সে ক্ষেত্রে মসজিদে না এসে বাসায় নামাজ পড়বেন। বিশেষ করে বৃদ্ধ, যারা হাঁচি, কাশি, জ্বর আছে তারা কোনোভাবেই মসজিদে আসবেন না। মানুষকে গণহারে মসজিদে আসার জন্য নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। যদিও এমন কোনো ব্যাখ্যা বা নির্দেশনা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নেই।