জুমার আগে বাংলা আলোচনা কি খুতবার অংশ?

জুমার আগে বাংলা আলোচনা কি খুতবার অংশ?

ঢাকা, ১৬ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

জুমাবারের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৫২৯তম পর্বে জুমার নামাজের বাংলা আলোচনাটি খুতবার অংশ কি না, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ঢাকার মুগদা থেকে টেলিফোন করেছেন খায়রুজ্জামান। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।

প্রশ্ন : জুমার নামাজে বাংলা যে আলোচনাটা হয়, সেটা কি খুতবার অংশ?

উত্তর : বাংলায় যে আলোচনা হচ্ছে, সে আলোচনাটা কী? সেটা কেন আলোচনা করা হচ্ছে, এই আলোচনার মাধ্যমে কি লোকদের উপদেশ দেওয়া হচ্ছে, নাকি এমনিতেই বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয়, বেহুদা কথা বলা হচ্ছে, সেটি বুঝতে হবে। যদি লোকদের উপদেশ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে খুতবাই তো উপদেশ। তখন এটিই হবে খুতবা।

আর যদি মনে হয় যে না, এটি বেহুদা, অপ্রয়োজনীয় কাজ করা হচ্ছে, তাহলে এই অপ্রয়োজনীয় কাজটুকু এখানে অবশ্যই নিষিদ্ধ হবে, ইমানদার ব্যক্তিদের হারাম যে কাজগুলো রয়েছে, তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে। ‘বেহুদা কাজ থেকে ইমানদার ব্যক্তিরা বিরত থাকবে, অবশ্যই দূরে থাকবে’।

যদি বলেন যে না, এ কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, প্রয়োজনীয়, মানুষদের উপদেশের জন্য, তাহলে অবশ্যই এটি খুতবা। এই খুতবাকে আপনি বাংলায়, ইংরেজিতে, উর্দুতে, আরবিতে নাম দিতে পারেন। যে নামই দেন না কেন, এটি খুতবা। এই খুতবা আপনি বাংলায় দিচ্ছেন এবং এটি অতিরিক্ত দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে আপনাকে রাসুলের (সা.) সুন্নাহর অনুসরণ করতে হবে। কারণ এটি ইবাদত, ইবাদত হিসেবে এই কাজটি আমরা করছি। ইবাদত যখন আমরা করব, সেটি রাসুলের (সা.) ফরমেটে হচ্ছে কি না, রাসুল যে সুন্নাহ তরিকা দিয়েছেন, সেই তরিকা অনুসারে হচ্ছে কি না, নাকি আমার ইচ্ছা অনুযায়ী, আমার প্রবৃত্তি অনুযায়ী এই ইবাদতটুকু করে যাচ্ছি, সেটা খেয়াল করতে হবে। রাসুলের (সা.) তরিকা হচ্ছে, তিনি জুমার নামাজের আগে দুটি খুতবা দিতেন। এখন আপনি যদি তিনটি খুতবা দেন, তাহলে এটি রাসুলের (সা.) সুন্নাহ পরিপন্থী কাজ, এটি বেদাত হবে কোনো সন্দেহ নেই। এটি আপনি নতুন আবিষ্কার করলেন। এখানে কোনো ধরনের সুযোগ নেই, যে কাজটি আল্লাহর নবী (সা.) করে গিয়েছেন এবং নবীর সাহাবিরা দেখিয়ে গিয়েছেন, সেই কাজের মধ্যে সামান্য পরিমাণ বৃদ্ধি করার। তাহলেই এটি বেদাত হয়ে যাবে। আবার সামান্য পরিমাণ কমও আপনি করতে পারবেন না, এটিও বেদাত হয়ে যাবে। শুধু বেদাতই হবে না, বরং আল্লাহর নবী (সা.) সহিহ মুসলিম হাদিসের মধ্যে বলেছেন, ‘সে ওই সমস্ত ব্যক্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে, যারা দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করেছে।’ দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি, যেটা রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন, যেটি উম্মতে হালাকের ধ্বংসের কারণ হিসেবে আরেকটি হাদিসের মধ্যে বলেছেন, তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে। সুতরাং এই কাজ কোনোভাবেই জায়েজ নেই যে রাসুলের (সা.) দেখানো পথ বাদ দিয়ে আমরা অন্য পথ অবলম্বন করব। এর ফলে আমরা অনেক বিভ্রান্তি, অনেক ধরনের বেদাত যোগ করে নিচ্ছি। আমাদের উচিত হবে আল্লাহর নবীর (সা.) পন্থা অনুসরণ করা।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/এমআই/১৩০০ঘ.)