কবি সুফিয়া কামালের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

কবি সুফিয়া কামালের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

ঢাকা, ৩০ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অগ্রপথিক জননী সাহসিকা মানবতার মৃম্ময়ী কবি সুফিয়া কামালের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সেগুনবাগিচাস্থ সুফিয়া কামাল ভবন মিলনায়তনে এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি নারীনেত্রী আয়শা খানম। প্রয়াত কবি সুফিয়া কামালের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য ও অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম।

কবি সুফিয়া কামালের জীবন ও কর্মের উপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইম্যান এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সানজীদা আখতার ও সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম ও সিনিয়র ট্রেনিং এন্ড রিচার্স অফিসার শাহজাদী শামীমা আফজালী শম্পা।

প্রয়াত কবি সুফিয়া কামালের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন মৃদুলা সমাদ্দার ও শ্রেয়া ঘোষ পূজা। অনুষ্ঠানে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন উপরিষদের সম্পাদকবৃন্দসহ মোট উপস্থিতি ছিল ১৫০ জন।

সভাপতি আয়শা খানম বলেন, তরুণদের মধ্যে কবি সুফিয়া কামালের চর্চা বাড়াতে হবে। এজন্য আামদের সেতুবন্ধনের কাজ করতে হবে। আমরা নিয়মিত পাঠচক্র করি। সেখানে কবি সুফিয়া কামালকে নিয়ে আলোচনা করি। সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকীর স্বারক বক্তব্য নিয়ে একটি প্রকাশনা বের করেছি। শীঘ্রই আরো একটি বের করা হবে। আমাদেরকে সুফিয়া কামালের জীবনী পাঠ করতে হবে এবং সেখান থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করে সেই আলোকে আমাদের চলতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের পাঠ্যপুস্তকে ভাষার ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে যা দুঃখজনক। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন সমাজে নারী-পুরুষের সমতার আনতে বহুমাত্রিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। নারী আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে অন্যান্য সংগঠন এবং ব্যক্তি উদ্যোগের সহযোগিতা প্রয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. সানজীদা আখতার বলেন, যার স্মরণে আমরা আজ এখানে একত্রিত হয়েছি এই মহিলা পরিষদ তারই হাত ধরে গড়ে উঠেছে। আমরা পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে তাকে তার কবি পরিচয়েই চিনি। নারী আন্দোলনে তার ভূমিকা, দেশভাগের ভূমিকা, মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকার সাথে আমাদের তরুণ প্রজন্মের তেমন পরিচয় নেই। তাকে কবি পরিচয়ের বৃত্ত থেকে বের করতে হবে। তিনি মহিলা পরিষদকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, আমরা পাঠ্যপুস্তকগুলোতে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াতের জীবনী পড়ি। কবি সুফিয়া কামালের জীবনীও পাঠ্যপুস্তকে যুক্ত হওয়া দরকার। তিনি আরো বলেন, বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল নারীবাদ কি তা না জেনেও তারা ছিলেন নারীবাদী।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম এবং সিনিয়র প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কর্মকর্তা শাহজাদী শামীমা আফজালী।

সভায় অ্যাড সুলতানা কামালসহ সংগঠনের উপদেষ্টা সেলিনা খালেক, সহ-সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, হান্নানা বেগম, মাখদুমা নার্গিস রত্না, নাহার আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ, স্বাস্থ্য সম্পাদক নূরুল ওয়ারা বেগম, অর্থ সম্পাদক দিল আফরোজ বেগম, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ সহ-সংগঠনের অন্যান্য সম্পাদক নেত্রী ও সংগঠকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১২৪৬ঘ.)