গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে

নির্বাচন তামাশায় পরিণত করে হেরেছে আওয়ামী লীগ: তারেক রহমান

নির্বাচন তামাশায় পরিণত করে হেরেছে আওয়ামী লীগ: তারেক রহমান

জাতীয় নির্বাচনের নামে যে তামাশার জন্ম দেয়া হয়েছে এর মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রমাণিত হয়েছে তারা জনবিচ্ছিন্ন একটি দল, প্রমাণিত হয়েছে সন্ত্রাসই তাদের ক্ষমতায় থাকার একমাত্র শক্তি।

ক্ষমতাসীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক কারচুপি, সহিংসতা আর বিরোধীদলসমূহকে কোণঠাসার মধ্যে দিয়ে সদ্য অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মজলুম জননেতা তারেক রহমান তাঁর বক্তব্যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন। জনগণকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, "আন্দোলনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধার, আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং পুনর্নির্বাচনের দাবি আদায় করতে হবে।"

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের তান্ডবে ভোট উৎসব অধিকার হরণের উৎসবে পরিণত হয় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, "সবার একটি চাওয়া ছিলো পুলিশী রাষ্ট্রের পরিবর্তে ভোটের মাধ্যমে এমন একটি রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠা করা যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। কিন্তু জনগণের সঙ্গে সে আশাকে অপমান, অবহেলা আর অবজ্ঞা করা হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ৮টায়। বিবিসি’র একটি রিপোর্টের মাধ্যমে সারা দুনিয়া দেখেছে চট্টগ্রাম-১০ আসনের লালখান বাজারের একটি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরুর আগেই সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ভোট কেন্দ্রে ঢোকানো হয়েছে একটি ব্যালট ভর্তি বাক্স। ভোটের এই বাক্সটি আগের রাতে সিল মেরে ভর্তি করে রাখা হয়েছিল। দেশের প্রায় সবকয়টি কেন্দ্রে একই তাণ্ডব ঘটেছে।একইভাবে রাতের অন্ধকারে, গোপনে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ভোটকেন্দ্রগুলো থেকে পাসের নকল সার্টিফিকেট নিলেও গণতন্ত্রের পরীক্ষায় আওয়ামী লীগ আজ পরাজিত হয়েছে। যে ভোটের দিনটি হওয়ার কথা ছিল উৎসবের। স্বাধীন দেশে পরাধীন নাগরিকদের উপর আওয়ামী হানাদার বাহিনীর তান্ডবে তা পরিণত হয় অধিকার হরণের এক বেধনা-বিধূর অভিজ্ঞতায়।"

তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে অনেককে ভোট না দিয়ে আসতে হয়েছে লাঞ্ছিত ও অপমাণিত হয়ে। ৭০ বছর বয়স্ক একজন বয়োবৃদ্ধ ঝিনাইদহ-৪ আসনের একটি কেন্দ্রে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বাধার মুখেও ভোট দিতে চাইলে তার গালে চপেটাঘাত করা হয়। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা একজন বৃদ্ধের গালে দেয়া এই চপেটঘাত যেনো বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও মর্যাদার গালে চপেটাঘাত, বাংলাদেশের আবহমান কালের সামাজিক, রাজনৈতিক মূল্যবোধের প্রতি চপেটাঘাত।

নির্বাচনের দিন সহিংসতায় নিহত নেতা-কর্মীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, "দেশের কোটি কোটি গণতন্ত্রকামী জনগণ এবং বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী সমর্থকদের আমি প্রথমে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। যারা ক্ষমতাসীন অপশক্তির ষড়যন্ত্র, হুমকি, ধমকি উপেক্ষা করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে শত প্রতিকূলতার মাঝেও নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। নির্বাচনে কার্যক্রমে অংশ নিয়ে পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে সারাদেশে অনেকে হতাহত হয়েছেন। সিলেটে বালাগঞ্জের ছাত্রদল নেতা সোহেল, কুমিল্লার লাঙ্গলকোটের বিএনপি নেতা বাচ্চু মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইসরাইলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যারা শহীদ হয়েছেন আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। হতাহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি।"

তিনি বলেন, গণতন্ত্রকামী মানুষ তাদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। ইনশাআল্লাহ তাদের হত্যাকারীদের বিচার একদিন অবশ্যই হবে।

নৌকায় ভোট না দেয়ার কারণে নোয়াখালীতে ৪ সন্তানের জননীকে গণধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, "কিছু মানুষ, যারা ভোট কেন্দ্রের ঢোকার সুযোগ পেয়েছেন কিন্তু নৌকায় ভোট দেননি তারা এখন আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রোষাণলে। তাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, চলছে বেপরোয়া লুট-পাট। গণধর্ষণ করা হয়েছে নারীদের। নৌকায় ভোট না দেওয়ার অভিযোগে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে একজন ৪ সন্তানের জননীকে তার স্বামী সন্তানের সামনে আওয়ামী এক দল দুর্বত্ত যেভাবে অপমাণিত করেছে, এই বর্বরতা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতাকেও হার মানায়।"

স্বৈরশাসকদের মেয়াদ স্থায়ী হয় না মন্তব্য করে মজলুম এই জননেতা বলেন, "প্রিয় দেশবাসী, এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গণতন্ত্রকামী জনগণ, বিশেষ করে আমি আমার দলের সর্ব স্থরের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-পৃথিবীতে অনেক দেশেই অনেক সময় খুনী-স্বৈরাচার জনগণের উপর চেপে বসে। জনগণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে তারা কিছু মাস, কিছু বছর ঠিকে থাকতে সক্ষম হলেও তাদের বিদায় হয় অত্যন্ত নির্মম, করুণ পরিণতির মধ্য দিয়ে। এই সরকারও বেশী দিন থাকতে পারবে না। তাদের জন্য অপেক্ষা করছে নিমর্ম ও করুণ পরিণতি।"

তরুণদের গণতন্ত্রের জন্য একতাবদ্ধ হবার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, "তরুণ প্রজন্মের কোটি কোটি ভোটার যারা নিজেদের জীবনের প্রথম ভোটের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন আপনাদেরকে দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে গণতন্ত্রের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হবার আহবান জানাই। আপনাদের সক্রিয় সমর্থন ও অংশগ্রহণ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে চূড়ান্ত সফলতার দিকে নিয়ে যাবে।"

ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী মানুষ অধিকার হরণ করেছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, "যে কোনোভাবে সরকার গঠন করার মধ্যে একটি রাজনৈতিক দলের সাফল্য নির্ভর করে না। সরকার গঠন করা একটি রাজনৈতিক দলের অনেকগুলো সাফল্যের একটি মাত্র। যারা জনপ্রতিনিধি হিসেবে সরকার গঠন করেন তারা জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছে কি না, জনগণ তাদের উপর আস্থাশীল কি না, জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতা আছে কি না। একটি সরকারের গণতন্ত্রের চরিত্রের জন্য এসব বৈশিষ্ট্যগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জনগণের চোখে ধুলো দিয়ে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে যারা গণতন্ত্রকে রক্তাক্ত করেছেন লজ্জায় ঘৃণায় তাদের মাথা হেট হয়ে যাওয়ার কথা অথচ পুলিশের একটি বিশেষ সুবিধাবাদী অংশ এবং নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ যেভাবে নিজেরা নিজেদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে তাতে তাদের এই কথিত বিজয় গৌরবের নয় বরং তা গ্লানির।"

তিনি বলেন, "জাতীয় নির্বাচনের নামে যে তামাশার জন্ম দেয়া হয়েছে এর মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রমাণিত হয়েছে তারা জনবিচ্ছিন্ন একটি দল, প্রমাণিত হয়েছে সন্ত্রাসই তাদের ক্ষমতায় থাকার একমাত্র শক্তি। জনগণের কাছে আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদেরকে একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে পরিচিত করেছে।"

তারেক রহমান বলেন, এই প্রহসনের নির্বাচনে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পরাজয় কিছুই নেই। কারণ জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় প্রতিযোগিতা কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। প্রতিযোগিতা কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতো দূরের কথা ৩০ ডিসেম্বর আদতে কোনো নির্বাচনই হয়নি।

শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিকরা অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বাংলাদেশের ইতিহাসে বিএনপির ইতিহাস স্বাধীনতার ইতিহাস, বিএনপির ইতিহাস গণতন্ত্রের ইতিহাস। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। হানাদারদের সঙ্গে আপোষ করেননি। একইভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য বার বার স্বৈরাচারী অপশক্তির সঙ্গে লড়াই-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন, আপোষ করেননি। শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক হিসেবে অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করবো না, আপোষ করতে পারি না।"

তারেক রহমান আরো বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মাত্র কয়েকটি বছর সরকার পরিচালনা করেছিলেন। ষড়যন্ত্র আর নানা অপপ্রচার সত্ত্বেও বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি ও তাঁর সরকারের সাফল্য আজও অনিবার্য। তাঁর জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা এখনো সকল প্রশ্নের উর্ধ্বে। একিভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিনবার রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনা করেছেন। প্রতিবারই তিনি সরকার গঠন করেছেন জনগণের সমর্থন নিয়ে। বারবার প্রমাণিত হয়েছে জনগণ ভোট দেবার সুযোগ পেলেই বিএনপি সরকার গঠনের সুযোগ পায়।

তিনি বলেন, বিএনপি সরকার বা বিরোধীদল যে অবস্থাতেই থাকুক না কেনো জনগণই তাদের শক্তি। এই শক্তির কাছে সব সময় আওয়ামী লীগ পরাজিত।

তারেক রহমান বলেন, "আমরা আগেই বলেছিলাম, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে না। হতে পারে না। অবৈধ শেখ হাসিনার অধীনে ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য কোনো নির্বাচন হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এই কারণেই বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিলো। জনগণ ভোটকেন্দ্র বর্জন করেছিলো। আর এবার জনগণকেই ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধার সৃষ্টি করেছে এই অবৈধ সরকার। জনগণের শক্তির উপর আস্থা রেখে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো। আমরা এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিলাম যাতে করে জনগণ নিজেরা নিজেদের ভোটাধিকার পছন্দের প্রার্থীকে বাছাই করতে পারে, দেশে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার গঠিত হতে পারে।"

সরকার জনগণের মুখোমুখি হতে ভয় পায় মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, "আমাদের দলের প্রিয় নেতা-কর্মী, ভাই-বোন ও সমর্থকেরা সবকয়টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কারণেই অবৈধ আওয়ামী সরকার গণতন্ত্র হত্যাকারি হিসেবে তাদের প্রতিষ্ঠিত চরিত্রটি সংশোধনের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তারা জনগণের মুখোমুখি হবার সাহস পায়নি বলেই তাদেরকে রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতি করতে হয়েছে। ফলে এ বিজয় আপনাদের আন্দোলনেরই বিজয়, জনগণেরই বিজয়। জনগণের স্বার্থ রক্ষায় বছরের পর বছর ধরে শত কষ্ট, জুলুম-নির্যাতনেও আপনার গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধার আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। আপনাদের এই ত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতি আমি গণতন্ত্রের প্রতীক কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।"

তারেক রহমান বলেন, "গণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তিকে পরাজিত করে আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য ক্ষমতাসীন ভোট ডাকাত, ব্যাংক ডাকাতের বিরুদ্ধে আমাদেরকে এ লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমেই খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং পুনর্নির্বাচনের দাবি আদায় করতে হবে।"


তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এবং গণতন্ত্র মুক্তির যে চলমান দাবি আপনাদের-আমাদের, এ দাবি বিপুলভাবে জনসমর্থিত। এই যৌক্তিক ও নৈতিক দাবির পক্ষে দেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ।

প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নেবার আহবান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, "অবৈধ ক্ষমতা দখলে রাখতে প্রশাসন ও পুলিশের বিশেষ একটি অংশকে ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার এমনভাবে দুর্নীতিযুক্ত ও কলুষিত করে ফেলেছে যে এর পরিণামে দেখা গেছে নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের দিন তাদের আচরণ ছিলো সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের মতো। এরা কেবল বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের বিপক্ষেই অবস্থান নেয়নি, তাদের অবস্থান ছিলো দেশের স্বার্থের বিপক্ষে, তাদের অবস্থান ছিলো দেশের মানুষের বিপক্ষে, তাদের অবস্থান ছিলো গণতন্ত্রের বিপক্ষে। তবে নানা লোভ ও চাপ উপেক্ষা করেও প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর যেসব সদস্য জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে চেয়েছেন আপনাদের প্রতি জনগণের শ্রদ্ধা। অদূর ভবিষ্যতেও আপনারা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন- জনগণ আপনাদের কাছ থেকে এমনটি আশা করে।"

সরকারের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, "জাতির ক্রান্তিলগ্নে একটি সুসংগঠিত ও জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে এ জাতীয়তাবাদী শক্তির দায়িত্ব সবচেয়ে বেশী। তাই জাতীয়বাদী শক্তির প্রতিটি নেতা-কর্মী ও সমর্থকের প্রতি আমার আহবান- আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন। দাবি আদায়ের সকল কর্মসূচি পালনে সক্রিয় থাকুন। সাহস এবং ধৈর্য্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকুন। গণতন্ত্র হত্যাকারি ষড়যন্ত্রকারি, বিবাধ-বিরোধ সৃষ্টিকারীদের বর্জন করুন, তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।"

"আমি আবারো বলছি, বার বার বলছি-আন্দোলনের চূড়ান্ত সফলতার পূর্ব শর্ত আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা। আমাদের মধ্য বিরোধ ও ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি করতে ক্ষমতাসীন অপশক্তি এখনো নানারকম অপকৌশল করছে। আপনারা এ ব্যাপারে সজাগ থাকবেন, বিভ্রান্ত হবেন না। গণতন্ত্রের বিজয় হবেই হবে। বিজয়ী হবেন জনগণ। ইনশাআল্লাহ।"

একে/জিএস