লন্ডনে ব্যাপক প্রতিবাদ

কোনো ষড়যন্ত্রই তারেক রহমানের অগ্রযাত্রা রুখতে পারবে না: বিএনপি মহাসচিব

কোনো ষড়যন্ত্রই তারেক রহমানের অগ্রযাত্রা রুখতে পারবে না: বিএনপি মহাসচিব

লন্ডন, ২২ জুলাই (জাস্ট নিউজ): বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারেক রহমানের নেতৃত্ব সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত। ষড়যন্ত্র করে সাজানো মামলায় রায় দিয়ে তারেক রহমানের অগ্রযাত্রাকে কেউ রুখতে পারবে না।

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত পূর্ব লন্ডনের হিলটন হোটেলে এক বিশাল প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

যুক্তরাজ্য বিএনপি সভাপতি এম এ মালিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদের পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক হাইকমিশনার সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসিম, বিএনপি চেয়ারপারসনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহান, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল হামিদ চৌধুরী ও যুগ্ম সম্পাদক কামাল উদ্দিন।

শত শত বিএনপি নেতা কর্মীর উপস্থিতিতে মহাসচিব বলেন, গোটা বাংলাদেশের অস্তিত্বই আজ বিপন্ন। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার এর কিছুই এখন আর অবশিষ্ট নেই। অনির্বাচিত সরকার সাংবিধানিক সকল প্রথা ও প্রতিষ্ঠানকে একে একে ধ্বংস করেছে। মানুষের শেষ ভরসাস্থল বিচারবিভাগেকেও তারা সংকীর্ণ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য ব্যবহার করছে।

তারেক রহমানের রায়ের তীব্র সমালোচনা করে মির্জা আলমগীর বলেন, তারেক রহমানের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাণিত হয়ে সরকার তাকে মামলা, নির্যাতনে জর্জরিত করে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়। তারেক রহমানের নেতৃত্ব আজ সময়ের পরীক্ষায় উর্ত্তীণ, জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত। ষড়যন্ত্র করে সাজানো মামলায় রায় দিয়ে তারেক রহমানের অগ্রযাত্রাকে কেউ রুখতে পারবে না।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জনগণকে সাথে নিয়েই একদিন জাতীয়তাবাদের রাজনীতির সূচনা করেছিলেন। সকল প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেই রাজনীতিকে শাণিত করেছেন। আর তাদের সুযোগ্য উত্তসূরি তারেক রহমানের নেতৃত্বেই এ রাজনীতি চূড়ান্ত রুপ লাভ করবে। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে, মাঠে-প্রান্তরে ঘুড়ে বেরিয়ে তৃণমূলকে সংগঠিত করেছেন তারেক রহমান। নির্যাতন, গুম-খুন করে এই সংগঠন ও তার আদর্শকে মানুষের হৃদয় থেকে মুছা যাবে না।

সাবিহ উদ্দিন আহমদ বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এ রায় বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রেরি অংশ। ষড়যন্ত্র চলছে দেশ, গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে। তিনি সময় থাকতে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার আহবান জানান।

এডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল কায়েম করে সিরাজ শিকদারসহ ৩০,০০০ প্রগতিশীল নেতা-কর্মীকে হত্যা করেও ক্ষমতার মসনদ ঠিকিয়ে রাখতে পারেননি। মামলা, হামলা, গুম-খুন করে তার কন্যাও টিকে থাকতে পারবেন না। ইতিহাসে কোনো ফ্যাসিবাদি সরকারের টিকে থাকার কোনো নজির নেই।

এডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা ও তার রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যার কোনো ভিত্তি নেই। এই মামলায় তিনি আগেই খালাস পেয়েছেন। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।

ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসিম মামলার ম্যারিট ব্যাখ্যা করে বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে ও তারেক রহমানকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য সরকার এই অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।

মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, সর্বোচ্চ আদালতকে দলীয় অঙ্গসংগঠনে পরিণত করেছে এই অনির্বাচিত সরকার। দলীয় লোককে বিচারপতি পদে নিয়োগ করে সমগ্র বিচার ব্যবস্থাকে কলুষিত করেছে।

তারেক রহমানের মামলার বিচারক বিচারপতি এনায়েতুর রহিম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই এনায়েতুর রহিম একজন দাঙ্গাবাজ উকিল হিসেবে আদালত পাড়ায় পরিচিত ছিলেন। তিনি একসময় দেশের প্রধান বিচারপতিকে অসম্মান করেছেন ও তার কক্ষে লাথি মেরেছেন। পুরস্কার হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে বিচারপতি পদে নিয়োগ দিয়েছে। এই বিচারপতিকে দিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার বিরুদ্ধে রায় পরিয়েছে সরকার। অথচ একি মামলায় এই সরকারের আমলেই নিম্নআদালত থেকে সসম্মানে খালাস পান তারেক রহমান। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হওয়ার কারণে তার প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। আর তাই তারা এখন একের পর এক কল্পনাপ্রসূত মামলা রুজু করে রায় বের করে নিচ্ছে। তিনি এর জন শেখ হাসিনাকে কড়া মাশুল দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহান সরকারের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, এই সরকার দুর্নীতি ও লুটেরার রাজত্ব কায়েম করেছে। তারেক রহমানের রায়ের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এ রায়ে জনগণ মোটেই বিচলিত ও আশ্চর্য নয়। এটি ষড়যন্ত্রেরি অংশ। বরং তারেক রহমান খালাস পেলে আমরা আশ্চর্য হতাম।

(জাস্ট নিউজ/প্রতিনিধি/জিইউএস/১৬০০ঘ)