সাগর-রুনি হত্যা: ৭ বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত

সাগর-রুনি হত্যা: ৭ বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার সাত বছর হয়ে গেছে। এই দীর্ঘ সময়েও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। ৬২ বার তদন্ত প্রতিবেদনের দিন পেছানো হয়েছে। এ পর্যন্ত ছয়জন কর্মকর্তা মামলা তদন্ত করেছেন। কিন্তু দৃশ্যত কোনো ফলাফল আসেনি।

আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য আছে।

মামলাটি বর্তমানে র‌্যাব সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক এএসপি শাহিদা রহমান তদন্ত করছেন। এর আগে র‌্যাব সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক মহিউদ্দিন আহম্মেদ তদন্ত করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জহুরুল ইসলাম, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রবিউল আলম, র‌্যাব সদর দপ্তরের সিনিয়র এএসপি মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ ও র‌্যাব সদর দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ওয়ারেছ মিয়া তদন্ত করেছেন।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, এ মামলায় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও হাত-পা বাঁধার রশিসহ বিভিন্ন আলামত আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে সন্দেহভাজন ২১ জন এবং গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ডিএনএ নমুনাও পাঠায় র‌্যাব। সেই আলামত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ডিএনএ রিপোর্টে দুজন অজ্ঞাত পুরুষের সন্ধান পাওয়া গেছে। কিন্তু তাদের এখনো গ্রেপ্তার বা সনাক্ত করতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি শাহিদা রহমান সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ডিএনএ রিপোর্ট অনুসারে দুজন অজ্ঞাত পুরুষের সন্ধান করা হচ্ছে। শিগগিরিই এ মামলার উল্লেখযোগ্য ফলাফল পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরের দিন ভোরে তাঁদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় রুনির ভাই বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন।

সাগর রুনি হত্যার পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ‘স্রেফ ৪৮ ঘণ্টা, এই সময়ের মধ্যেই খুনিরা ধরা পড়বে। খুনের কারণও জানা যাবে।’ সেই ৪৮ ঘণ্টা আজও শেষ হয়নি।

আর এই সময়ের মধ্যে সরকার বদল হয়েছে দুইবার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন চারজন।
এদিকে মামলার পর রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট নয়জনকে আটক করা হয়। বাকিরা হলেন রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর, আবু সাঈদ ও বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির। এর মধ্যে মধ্যে পলাশ রুদ্র পাল ও তানভীর রহমান জামিনে রয়েছেন।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে সাত বার মামলার তদন্তের অগ্রগতির প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬২ বার তদন্ত প্রতিবেদনের দিন পেছানো হয়েছে।

এমআই