সাগর-রুনি হত্যা

আসামি তানভীরের মামলা বাতিলের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ

আসামি তানভীরের মামলা বাতিলের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি তানভীর রহমানের ক্ষেত্রে মামলা বাতিলের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতের এখতিয়ার নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ প্রশ্ন তুললে আজ বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

তবে আবেদনকারীর আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, ‘আমাদের মতে এই আদালতের শুনানির এখতিয়ার আছে। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ এই আদালতের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন। এখন এই বেঞ্চে যেন শুনানি হয় সে জন্য প্রধান বিচারপতি বরাবরে আবেদন করব।’

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। সকালে তিনি তদন্তের সর্বশেষ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। এই মামলা শুনানিতে আদালতের এখতিয়ার আছে কিনা সে মর্মে প্রশ্ন তোলেন। এরপর আদালত আদেশ দেন।

আদেশে আদালত বলেন, ‘১৪ নভেম্বরের আদেশ অনুসারে হলফনামামূলে প্রতিবেদন দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানির শুরুতে আদালতের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। আমরা আমাদের এখতিয়ার সম্পর্কে অবহিত। যেহেতু রুলটি চলমান সেহেতু এই মামলার শুনানি ও আদেশ প্রদানে এখতিয়ারগত বাধা নেই। এরপরও রাষ্ট্রপক্ষ প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তাই মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলো।’

এর আগে গত সোমবার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে আদালতে হলফনামা আকারে দাখিলের জন্য র‌্যাবের পক্ষ থেকে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

গত বছরের ১৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আগামী ৪ মার্চ বা তার আগে এ মামলার তদন্তের সবশেষ অবস্থা এবং অপরাধের সঙ্গে তানভীরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন হলফনামাসহ দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

ওই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তারের পর জামিনে থাকা মো. তানভীর রহমান তার বিরুদ্ধে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। গত ২০ অক্টোবর হাইকোর্ট ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করে রুলসহ আদেশ দেন।

রুলে তানভীর রহমানের ক্ষেত্রে ওই মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। পরে তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টে হাজির হয়ে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান। এর ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৪ নভেম্বর ওই আদেশ দেন আদালত।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সরওয়ার হোসেন বাপ্পী।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে মামলাটির তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত ভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর। দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্ত দেওয়া হয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব)।

এ ঘটনায় ২০১২ সালের ১ অক্টোবর সন্দেহভাজন হিসেবে তানভীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৪ সালের ২ ডিসেম্বর তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট।