মানবজমিন এর বিরুদ্ধে এমপির মামলা প্রত্যাহার দাবি প্রবাসী সাংবাদিকদের

মানবজমিন এর বিরুদ্ধে এমপির মামলা প্রত্যাহার দাবি প্রবাসী সাংবাদিকদের

মানবজমিন এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, নিঁখোজ সাংবাদিক কাজলকে উদ্ধার ও গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিক আরিফের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন প্রবাসী সাংবাদিকরা।

এক বিবৃতিতে তারা বলেন, সম্প্রতি দৈনিক মানবজমিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও প্রতিবেদক আল আমিনসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিডিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি সাইফুজ্জামান শিখর। মানবজমিন-এর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ মামলাটি সম্পুর্ণ অনুমান নির্ভর ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কারণ মানবজমিনে প্রকাশিত সে প্রতিবেদনে কোথাও শিখরের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

বিবৃতিতে প্রবাসী সাংবাদিকরা বলেন, নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে বাংলাদেশে এমনিতেই অনুসন্ধানী ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

বিবৃতিতে সাংবাদিকরা বলেন, সাইফুজ্জামান শিখরের দায়েরকৃত এই মামলায় অন্য একজন আসামী হলেন সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। ১০ই মার্চ দুপুর ৩টায় বাসা থেকে বের হবার পর কাজলের সাথে তার এক সহকর্মীর সর্বশেষ দেখা হয় সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিটের দিকে হাতিরপুল বাজারে। তারপর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন তিনি।

ক্ষমতাসীন দলের একজন এমপির দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল নিরুদ্দেশ হয়েছেন। আমরা তার এই নিখোঁজ হওয়াকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে নিতে পারছিনা। কারণ অতীতে এরকম কিছু নিখোঁজের নজির আছে যা সমাজকে আতংকিত করেছে। কাজলের কোনো ধরনের ক্ষতি হলে সরকারকেই তার দায় নিতে হবে। আমরা অবিলম্বে কাজলকে সুস্থ শরীরে উদ্ধার করে তাকে তার পরিবার ও সহকর্মীদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানের বাসায় মধ্যরাতে অতর্কিত হানা দিয়ে অস্ত্রধারী অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১৫-১৬ জন আনসার সদস্যকে সাথে নিয়ে তাকে মারধর করে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। রিগ্যানকে তুলে ডিসি অফিসে রেখে আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা সঙ্গে দিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন জেলার একটা সরকারি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করেছিলেন। রিগ্যান সেটা নিয়ে রিপোর্ট করেছিলেন। সেই থেকে রিগ্যানের ওপর ক্ষুব্ধ ডিসি শেষ পর্যন্ত রিগ্যানকে মধ্যরাতে আটক করিয়েছেন। আমরা তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।

বিবৃতিদাতারা হলেন, মুশফিকুল ফজল আনসারী, মনির হায়দার, মনিজা রহমান, ইমরান আনসারী, শওকত ওসমান রচি, তুহিন সানজিদ (যুক্তরাষ্ট্র), শামসুল আলম লিটন, অলিউল্লাহ নোমান, কাফি কামাল, মাহাবুবুর রহমান, মাহবুব আলী খানসুর, শফিকুল ইসলাম জুয়েল, রফিক মজুমদার, আমিনুল ইসলাম (যুক্তরাজ্য), দীন ইসলাম (কানাডা), নিয়াজ মাহমুদ, কামরুজ্জামান কাজল, ওয়াহিদুজ্জামান, এম এ মান্নান আজাদ (ফ্রান্স), ড. মারুফ মল্লিক, রিয়াজুল ইসলাম, মনি মাহমুদ (জার্মানি)।