যে ৩ কারণে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশ

যে ৩ কারণে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশ

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল (জাস্ট নিউজ) : গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের অধিকার প্রশ্নে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক সংস্থা রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচক ২০১৮'-এর প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে।

১৮০ দেশের ওই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬তম। গত বছর বাংলাদেশ একই অবস্থানে থাকলেও নেতিবাচক সূচকে পরিস্থিতি আগের চাইতে খারাপ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারের নেতিবাচক সূচক বেড়েছে দশমিক দুই-ছয় শতাংশ।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাংবাদিক ও ব্লগারদের ওপর অব্যাহত হামলা মামলাকে বাকস্বাধীনতার পথে অন্যতম বাধা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় ব্লগার ও ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিচারের আওতায় আনা, বিশেষ করে যেসব সাংবাদিক ও ব্লগার সেন্সরশিপের বিরোধিতা করে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এমনকি মৃত্যুদণ্ডের ঝুঁকি থাকায় সেন্সরশিপ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে জানায় সংস্থাটি।

তাদের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে অন্তত ২৫ জন সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন। সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ওপর সহিংসতা এবং এর পেছনে দায়ি ব্যক্তিরা সহজে রেহাই পাওয়ায় গণমাধ্যমের ওপর সেন্সরশিপ বেড়েই চলছে বলে জানায় তারা।

এমন পরিস্থিতিতে সরকার গণমাধ্যম আইন সংশোধনের পরিবর্তে, চলতি বছর নতুন একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেন। সেখানে ভিন্নমত দমনে কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়ার তিনটি কারণ
আরএসএফ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ি যেসব কারণে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে সেগুলো হলো:
১. তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় সাংবাদিকদের বিচারের আওতায় আনা
২. সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ওপর অব্যাহত সহিংসতা
৩. সাংবাদিকদের ওপর হামলার পেছনে দায়ি ব্যক্তিরা সহজে রেহাই পেয়ে যায়

এ ব্যাপারে গণমাধ্যম বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক জানান, “যখন কোনো দেশের সরকার কর্তৃত্বপরায়ন হয় তখন সেখানকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নের মুখে পড়ে। বাংলাদেশে একের পর আইন প্রণয়ন করার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ না ফেরা পর্যন্ত এই স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যাবেনা।”

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের ওই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে ভুটান, নেপাল, এবং আফগানিস্তান। ভারত রয়েছে ১৩৮ ও পাকিস্তান ১৩৯তম স্থানে। বাংলাদেশের চেয়ে ২৯ ধাপ এগিয়ে থাকা দেশটির অবস্থান এখন ১১৭তে।

এদিকে ট্রাম্পের শাসনামলে দ্বিতীয়বারের মতো পিছিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছরের চেয়ে দুই ধাপ পিছিয়ে এবার তাদের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৪৫ এ। সূচকে প্রথম ৫টি দেশ হলো, নরওয়ে, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, ও সুইজারল্যান্ড। তলানির ৫টি দেশ উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া। সূত্র: বিবিসি।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২১৫৪ঘ.)