উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ

দিনকাল বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৯ দেশের উদ্বেগ প্রকাশ

দিনকাল বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৯ দেশের উদ্বেগ প্রকাশ

বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি কর্তৃক প্রকাশিত দৈনিক দিনকাল পত্রিকা বন্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন। শুক্রবার ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা, বাংলাদেশস্থ মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন (এমএফসি)-এর নিম্নস্বাক্ষরিত সদস্যরা, দৈনিক দিনকাল পত্রিকার ডিক্লারেশন (প্রকাশ ও মুদ্রণের অনুমোদন) বাতিল করার যে সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সরকার সাম্প্রতিক সময়ে নিয়েছে সে ব্যাপারে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করছি। গণতন্ত্রের স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে স্বাধীন সংবাদপত্র ও বাকস্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র স্বাক্ষর করেছে।

সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা দেশগুলোর জোট মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের (এমএফসি) ডিপ্লোম্যাটিক নেটওয়ার্ক ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করেছে। গত ৯ ফেব্রুয়রি ডিপ্লোম্যাটিক নেটওয়ার্ক ইনিশিয়েটিভ ঢাকায় নিজেদের কাজ শুরু করে। 

দৈনিক দিনকাল পত্রিকায় বন্ধ করে দেওয়ায় ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি নিয়মিত ব্রিফ্রিংয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক বলেন, দৈনিক দিনকালসহ বাংলাদেশে বেশ কিছু গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত করে দেয়ার বিষয়টি উদ্বেগের এবং তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

ব্রিফ্রিংয়ে জাতিসংঘের স্থায়ী সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, "আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যে দেশটিতে মাতৃভাষার অধিকারের জন্য ১৯৫২ সালে লড়াই হয়েছিলো। অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা সে অধিকার আদায় করতে পেরেছি বলেই দিবসটি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছে। দিবসটিকে গুরুত্ব দেবার জন্য আপনি এবং মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই মাতৃভাষা দিবস পালনের এই অর্জনের মধ্যেও এখনো আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়ে যেতে হচ্ছে। ভাষা দিবসের ঠিক আগেই বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদল কর্তৃক প্রকাশিত বাংলা ভাষার পত্রিকা দৈনিক দিনকাল বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।এ নিয়ে প্রকাশিত এএফপি’র রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, পত্রিকাটিতে শত শত সাংবাদিক এবং কর্মচারি কর্মরত ছিলেন। দৈনিকটি সরকারের সমালোচনা করে রিপোর্ট প্রকাশ করতো, যা দেশের প্রধান সারির গণমাধ্যমগুলো করার সাহস পায়না। আর এ সংবাদমাধ্যম গুলো সরকার এবং তাদের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। সরকার যে একের পর এক সংবাদ মাধ্যমগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে। এব্যাপারে জাতিসংঘের অভিমত কী?"

জবাবে ডোজারিক বলেন, "বাংলাদেশে বেশ কিছু গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেভাবে সংকুচিত করে দেওয়া হয়েছে তা আমরা উদ্বেগের সাথে পর্যবেক্ষণ করছি। ইতিমধ্যে এ নিয়ে আমাদের উদ্বেগ স্পস্টভাবে উল্লেখ করেছি।"

ভবিষ্যতেও এ ইস্যুতে জাতিসংঘের অবস্থানের কোনো রদবদল হবেনা বলে উল্লেখ করেন মহাসচিবের মুখপাত্র ডোজারিক।