প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে কলঙ্কিত হতে চাই না: ইসি মাহবুব

প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে কলঙ্কিত হতে চাই না: ইসি মাহবুব

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য। গণতন্ত্রের মূলভিত্তি হলো নির্বাচন। যারা দেশ পরিচালনা করবেন, নির্বাচনের মাধ্যমে তাদেরকে বেছে নেয়ার প্রক্রিয়ায় আজ আপনারা (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) বিশেষ দায়িত্ব পালন করছেন। এই দায়িত্বটি অত্যন্ত গৌরবজনক, আপনারা গণতন্ত্রের অগ্রসৈনিক। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আপনারা আইনের শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করবেন।

আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের তিন দিনব্যাপী ব্রিফিংয়ের শেষ দিনে কার্যক্রম উদ্বোধনকালে সোমবার সকালে এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

মাহবুব তালুকদার বলেন, বলা হয়ে থাকে নির্বাচন আইনানুগ হতে হবে। এই কথাটি ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে। আইন যদি সবার জন্য সমান না হয়, সবার জন্য সমানের নিশ্চয়তা না দেয় তাহলে সেটি আইন নয়। সেটি কালো আইন। আপনারা আইনের প্রতিপালক, কালো আইনের নয়।

নির্বাচনে আচরণবিধি দৃঢ়ভাবে কার্যকর করা, আচরণবিধি ভঙ্ঘকারীদের শাস্তি দেয়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীর সহযোগে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ আপনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

এবারের নির্বাচনে দেশব্যাপী সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। আপনাদের নির্দেশনায় সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। সেজন্য প্রতিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে আপনারা কর্তব্য পালন করবেন। যাতে ভোটারদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের চাওয়া অত্যন্ত সামান্য। একজন ভোটার যেনো নির্বিঘ্নে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন, নিজের ইচ্ছামত যাকে খুশি ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন। এইটুকুই তো আমাদের চাওয়া। রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই সামান্য চাওয়া অসামান্য কর্মযজ্ঞে রুপান্তরিত হয়েছে। সবকিছু সত্ত্বেও ভোটারদের সামান্য চাওয়াটুকু যেকোনো মূল্যে ফিরিয়ে দেয়ার নিশ্চিয়তা দিতে হবে।

এবারের জাতীয় নির্বাচনে একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে। সবগুলো রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। ‘কোন বনেগা এমপি’ এখন সর্বোচ্চ আলোচনার বিষয়।
দেশব্যাপী ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমরা চাই উৎসবমূখর পরিবেশে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হোক। নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। আপনারা সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে এই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন কমিশন সর্বদাই আপনাদের পাশে আছে।

এবারের নির্বাচন আমাদের আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখার নির্বাচন। শুধু দেশবাসী নয়, বিশ্ববাসীও এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। সকল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ একটি সুষ্ঠু, স্বাভাবিক, শুদ্ধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না, তা হতেই পারে না।

আমরা আমরা কোনো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে কলঙ্কিত হতে চাই না। নির্বাচনে যে কেউ জয়ী বা পরাজিত হতে পারে। দেশবাসী যেনো পরাজিত না হয়।
রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতার অংশ দিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি- ‘সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম। সে কখনো করে না বঞ্চনা।

ব্রিফিংয়ে সিইসি, বাকি তিন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৪৪৪ঘ.)