খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়ার বিষয়টি আদালতের ব্যাপার: ইসি সচিব

খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়ার বিষয়টি আদালতের ব্যাপার: ইসি সচিব

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়ার বিষয়টি আদালতের ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই।

মঙ্গলবার বিকালে নির্বাচন কমিশনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় নির্বাচনি আচরণবিধির প্রসঙ্গ তুলে ইসি সচিব বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কোনো প্রার্থী বাস ও ট্রাক মিছিল, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, মশাল মিছিলসহ কোনো ধরনের শোডাউন করতে পারবেন না। ইতোমধ্যে মনোনয়মপত্র জমা দেওয়ার আগে কোনো কোনো স্থানে এধরনের শোডাউনের তথ্য আামরা পেয়েছি। আমরা রির্টানিং অফিসার ও নির্বাহী মেজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছি, এগুলো প্রতিহত করা এবং আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’

তিনি আরো বলেন, ‘কোনো প্রার্থী বা তার সমর্থিত কেউ হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন না। হেলিকপ্টার ব্যবহার করে কেউ লিফলেট বা প্রচারপত্র ছড়াতে পারবেন না। তবে রাজনৈতিক দলের প্রধান নির্বাচনি কাজে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন।’

রির্টানিং অফিসারদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা নেই দাবি করে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমরা জনপ্রশাসনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি, তারা যেনো কেউ রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্রিফ না করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তারাও যেনো কারো ব্রিফে অংশ না নেন। তবে আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের গণমাধ্যমে কথা না বলার বিষয়ে কোনো চিঠি দেইনি। এই বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকলে আমরা তাদের বলে দেবো এবং প্রয়োজনে আবার চিঠি দেবো।’

খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উনার মনোনয়নের বিষয়টি আইনি বিষয়। এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।’

ফেসবুকে নির্বাচনি প্রচারণায় ইসির কিছু করণীয় নেই জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণার বিষয়ে আমরা কিছুই বলিনি, এটা আচরণবিধিতে আনার সুযোগ নেই। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেনো অপপ্রচার না হয় এই নির্দেশনা আমরা দিয়েছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোনো সংসদ সদস্য সংসদের স্টিকার ব্যবহার করে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন না এবং নির্বাচনি এলাকায় যেতে পারবেন না। কোনো মন্ত্রীও মনোনয়নপত্র জমা দিতে চাইলে তাকে পতাকা নামিয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে যেতে হবে।’

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চের এক আদেশের ফলে বিএনপি চেয়াপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব দলের সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের, যাঁদের সাজা-দণ্ড স্থগিত হয়নি, নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।

মঙ্গলবার দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ ব্যাপারে বলেন, দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আপিলে খালাস পেলেও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। নির্বাচনে অংশ নিতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্তির পরও পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে বলেও জানান তিনি।

আদালতের উক্ত আদেশে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কারো দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে সেই দণ্ড বা সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। অবশ্য যতক্ষণ না আপিল বিভাগ ওই রায় বাতিল বা স্থগিত করে তাঁকে জামিন দেন।

উক্ত রায়ের ব্যাপারে মঙ্গলবার বিকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, এ রায় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টকে প্রতিহত করতে দেওয়া হয়েছে, জনগণের কাছে এ রায় গ্রহণযোগ্য নয়।

(জাস্ট নিউজ/একে/২১২৪ঘ.)