ভারতে গরু হত্যার গুজবে গো-রক্ষকদের তাণ্ডব, নিহত ২

ভারতে গরু হত্যার গুজবে গো-রক্ষকদের তাণ্ডব, নিহত ২

ঢাকা, ৫ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : ভারতের উত্তর প্রদেশে গো-রক্ষকদের তাণ্ডবে পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। ৩ ডিসেম্বর দিনভর বুলন্দশহর তাণ্ডব চালায় গোরক্ষকরা। পরিস্থিতি এখনও থমথমে। হাজারের ওপর নিরাপত্তারক্ষীর ভারী বুটে তটস্থ পুরো এলাকা।

উত্তর প্রদেশের পুলিশের এডিজি আনন্দ কুমার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় প্রায় ৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তবে প্রধান অভিযুক্ত উগ্র হিন্দুত্ববাদী বজরং দলের জেলা আহ্বায়ক যোগেশ রাজকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার পর থেকে যোগেশ রাজ পলাতক রয়েছেন। যোগেশই এ সন্ত্রাসবাদের মূল হোতা ও সে সহিংসতা ছড়াতে ইন্ধন জুগিয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই তে প্রকাশ, সোমবার বুলন্দশহরের স্যানা মহকুমা এলাকায় মাহু গ্রামের বাইরে জঙ্গল লাগোয়া একটি মাঠে গুরু জবাই হয়েছে বলে চাউর হয়। এ খবরে খিপ্ত হয়ে পড়ে ওই গ্রামের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের গো-রক্ষক কর্মীরা। এসময় তারা গরুর দেহাবশেষ নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

বিক্ষোভ থামাতে ও সড়ক অবরোধ সরাতে স্থানীয় চিংরাবটি পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা সুবোধ কুমার সিংহের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেখানে গেলে ক্ষুব্ধ জনতা ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা ইট-পাথর নিক্ষেপসহ পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালায় এবং পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এসময় সুমিত কুমার নামে এক বিক্ষোভকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। একইসময় জনতার আক্রমণে রহস্যজনকভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন পুলিশ কর্মকর্তা সুবোধ কুমার সিংহ।

মঙ্গলবার সুবোধ কুমারের নিহতের বিষয়টিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে তার বোন সংবাদ সংস্থা এএনআইকে অভিযোগ করেন, ষড়যন্ত্র করে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে।

এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, প্রায় তিন বছর আগে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ফ্রিজে গোমাংস রাখার সন্দেহে উত্তর প্রদেশের দাদরির বাসিন্দা মুহাম্মদ আখলাক নামে এক মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। সেই মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন সুবোধ কুমার সিংহ।

শুধু নিহত পুলিশের বোনই নন গো-রক্ষকদের এমন বিক্ষোভ প্রদর্শন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ভারতীয় সমাজ পার্টি’র সভাপতি ওমপ্রকাশ রাজভর।

তিনি বলেন, এটা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল এবং আরএসএসের ষড়যন্ত্র। মুসলিমদের ইজতেমার দিনেই কেন ওই বিক্ষোভ প্রদর্শন হল? এটা সাম্প্রাদায়িক দাঙ্গা ছড়ানোর চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ মন্তব্য করে কংগ্রেস পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন সামনে এলেই এমন সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো হয়। সরকার যদি দেশ চালাতে পারে, তাহলে তাদের ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া উচিত।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/০৯০৪ঘ.)