‘দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর একজনের হাতে লাঠি, অন্যজনের হাত-পা বেঁধে দেয়া হয়েছে’

‘দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর একজনের হাতে লাঠি, অন্যজনের হাত-পা বেঁধে দেয়া হয়েছে’

ঢাকা, ৭ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, পুরো ঘটনাচিত্র দেখে মনে হচ্ছে, এই নির্বাচনে যেন দুজন প্রতিদ্বন্দ্বী। একজনের হাত-পা বেঁধে দেয়া হয়েছে, আরেক জনের হাত-পা মুক্ত আছে এবং হাতে একটি লাঠি দিয়ে দেয়া হয়েছে। এরকম দুই ব্যক্তির মধ্যে তো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে না। এই নির্বাচনের দৃশ্যপট দেখে মনে হয়েছে এটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। কিন্তু এটা আদৌ সুষ্ঠু কি না, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার বহু অবকাশ আছে এবং এটা কোনো নির্বাচন হতে পারে না।

শুক্রবার একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এটা হবে জবরদস্তিমূলক চালাকি করে একধরনের প্রচণ্ড অসমতল ভূমির সৃষ্টি করা। যেটার মাধ্যমে যতভাবে পারা যায় সরকারি দলের বিজয় নিশ্চিত করা। আর বিরোধী দলের শক্তি খর্ব করা।

যতভাবে পারা যায় নির্বাচন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই চেষ্টা করা হচ্ছে এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে সত্যি সত্যি নির্বাচনের দিন কী হবে, ভোট গণনা ঠিকভাবে হবে কি না- এগুলো নিয়ে প্রচণ্ড সংশয় ব্যক্ত করার কারণ আছে।

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মনোনয়ন বাছাই করার ক্ষেত্রে বিএনপির প্রার্থীদের বাদ দেয়া হচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের স্বাক্ষর দেখে নাকি সন্দেহ লেগেছে- এটা তার স্বাক্ষর কি না। তাহলে আওয়ামী লীগের সৈয়দ আশরাফের টিপসই দেখে তাদের সন্দেহ লাগলো না কেন? সৈয়দ আশরাফের টিপসইয়ের কি কোনো নকল তাদের কাছে ছিল? কপি ছিল? বা টিপসই পরীক্ষা করার কোনো যন্ত্র তাদের কাছে ছিল? এরকম বহু ঘটনা আছে।

এছাড়া সবচেয়ে বড় যে অন্যায়টা হচ্ছে, সেটা হলো- পুলিশ ঢালাওভাবে বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। গায়েবি মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে যাকে পাচ্ছে তাকেই ঢুকিয়ে দিচ্ছে। সম্পূরক অভিযোগপত্রে নাম দিয়ে বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনকে জেলে দেয়া হয়েছে এবং তিনজন সংসদ সদস্যের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। প্রচুর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা হয়েছে। ৩০০ জনের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। প্রত্যেকে গ্রেপ্তারের আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন এবং তাদের নেতা-কর্মীরা এলাকায় যেতে পারছেন না। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১২০৮ঘ.)