বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

তরুণদের ভোট টানতে কী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে দুই প্রধান দল?

তরুণদের ভোট টানতে কী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে দুই প্রধান দল?

ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : এবারের নির্বাচনে একদম নতুন ভোটার আছে দুই কোটির উপরে। একটা বিশাল সংখ্যক ভোটার এবার জীবনে প্রথম ভোট দেবেন। পর পর দুইবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে তারা অন্য কোনো সরকারের শাসনকাল অনেক দিন ধরে দেখেননি। বলা হচ্ছে এবার তাই তরুণ ভোটাররা হয়ত নির্বাচনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি এই দুই দলই তাদের ইশতেহারে তরুণদের দিকে বাড়তি মনোযোগ থাকবে বলে জানিয়েছে।


তরুণদের সাম্প্রতিক দুটি আন্দোলন কিছুটা হলেও ইশতেহারে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে হচ্ছে।

তরুণদের জন্য আওয়ামী লীগের ইশতেহারে কি প্রতিশ্রুতি রয়েছে?

আওয়ামী লীগ বলছে মানবসম্পদ উন্নয়নের দিকে, বিশেষ করে তরুণদের মেধা, সৃজনশীল ক্ষমতা কাজে লাগানোর জন্য অধিকতর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উপরে বিশেষ জোর দেয়া হবে।

ইশতেহারে তরুণদের জন্য যে অংশটি রয়েছে সেখানে আওয়ামী লীগ আবারো 'ডিজিটাল' শব্দটি গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করেছে।

যে শব্দটি গত দুই বারের সংসদ নির্বাচনে তাদের প্রচারণায় ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছে।

তাদের ইশতেহার বলছে, "সোনার বাংলা' স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানতম শক্তি হচ্ছে যুব শক্তি"। তাদের জন্যে করা আওয়ামী লীগের পরিকল্পনার কয়েকটি হলোঃ

• সরকারি চাকরিতে শুধুমাত্র অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা ছাড়া আর কোনো কোটা থাকবে না।

• তরুণদের আত্মকর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে বিনা জামানতে ও সহজ শর্তে জনপ্রতি দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা আরো বিস্তৃত করা হবে।

• আগামী তিন বছরের মধ্যে সরকারি শূন্য পদে নিয়োগ সম্পন্ন করা। ব্যাপক সংখ্যক নন-গ্রাজুয়েটের কর্মসংস্থান হবে কৃষি উৎপাদন এবং বিপন্ন সমবায়ে।

• আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি ২৮ লাখ কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা।

• ত্রিশোর্ধ শিক্ষিত বেকারের জন্য বেকার ভাতা চালু করার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা পরীক্ষা করে তা বাস্তবায়ন করার জন্য একটি কমিশন গঠন করা।

• সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা।

• তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচী দেশের প্রতিটি জেলায় প্রসারিত করা হবে।

• প্রতিটি উপজেলায় যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

বিএনপির কি প্রতিশ্রুতি?

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে যে বড় দুটি আন্দোলন হয়েছে সেগুলো তরুণদের আন্দোলন। একটি হলও কোটা সংস্কার অন্যটি নিরাপদ সড়ক আন্দোলন।

এই দুটি আন্দোলন ক্ষমতাসীন দল সঠিকভাবে সামাল দিতে পারে নি বলে মনে করা হয়। বলা হচ্ছে যার কারণে আওয়ামী লীগের সাথে তরুণদের এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে সরকার হিসেবে বিএনপির দক্ষতা যাচাই করার তেমন কোনো সুযোগ অনেক তরুণই পায়নি। বিএনপির জন্য এই দুটি বিষয় বিশেষ সুযোগ হতে পারে বলে মনে করা হয়। কিন্তু সেই সুযোগ বিএনপি কতটা কাজে লাগাতে পারবে সেটি এখনি বোঝা মুস্কিল।

তাদের ইশতেহারে তরুণদের জন্য যা রয়েছে তার কয়েকটি দেখে নেয়া যাক।

• প্রথম তিন বছরে দুর্নীতি মুক্ত ব্যবস্থায় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে দুই লাখ মানুষকে চাকরি দেয়া।

• এক বছর অথবা কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষিতদের বেকার ভাতা প্রদান। এদের যৌক্তিক অর্থনৈতিক উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা করা।

• শিক্ষার্থীদের উপর সকল ভ্যাট বাতিল করা।

• ভ্যাট বিরোধী, কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে আনা সকল মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া।

• তরুণ দম্পতি ও উদ্যোক্তাদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ২০ বছর মেয়াদি ঋণ চালু করা।

• আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

• বিদেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের সুবিধার্থে মেধাবীদের বৃত্তি প্রদানের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করা। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২০০০ঘ.)