নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সহিংসতা পরিহার করতে হবে: যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সহিংসতা পরিহার করতে হবে: যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত

ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে হলে সব পক্ষকে সহিংসতা পরিহার করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্ল রবার্ট মিলার। তিনি বলেন, সহিংসতামুক্ত নির্বাচন করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। আশা করছি তারা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বুধবার রাজধানীর গুলশানের এক হোটেলে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পর যে বক্তব্য তিনি দিয়েছিলেন আজকেও একই বক্তব্য।

দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে ওই বৈঠক শুরু হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

কূটনীতিকদের মধ্যে অংশ নেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারসহ যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, কানাডা, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়াসহ ৩৫টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নেন।

বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও নির্বাহী কমিটির সদস্য জেবা আমিন খান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক শেষে রবার্ট মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়ে যেসব রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়ে আমরা অবগত আছি। আমরা চাই ভয় ভীতি ও আশঙ্কামুক্ত একটি নির্বাচন হোক।

বৈঠক শেষে বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন সাংবাদিকদের বলেন, আজকে মূলত সেরকম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছিল না। আমরা এবার নির্বাচনে যাচ্ছি। তার জন্য ইশতেহার ঘোষণা করেছি। ইশতেহার ছিল বাংলায়। তা আমরা ইংরেজি করে বিদেশি কূটনৈতিকদের দিয়েছি এবং ইশতেহারের মূল বিষয়, আমরা কি করতে চাই তা তাদেরকে জানিয়েছি। এছাড়াও আমরা কিভাবে বাঁধার মুখোমুখি হচ্ছি, হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারের শিকার হচ্ছি তা জানিয়েছি।

রিপন বলেন, আপনারা জানেন তারা নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে খুব সিরিয়াস। আমাদের যে কয়েকজন নারী প্রার্থী ছিল তারা সবাই সম্প্রতি আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এসব বিষয়ে আমরা তাদেরকে অবহিত করেছি। কূটনীতিকদের বক্তব্য কি ছিল জানতে চাইলে রিপন বলেন, বিদেশি কূটনীতিকরা সাধারণত শোনেন, বোঝেন কিন্তু তারা কোনো মন্তব্য করেন না।

এদিকে বৈঠক শেষে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছি যদি ২০ তারিখ থেকে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হয়, তাহলে এখন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা হচ্ছে তা হবে না। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারসহ যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, কানাডা, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়াসহ ৩৫ টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নেন।

বৈঠকে অংশ নেয়া ঐক্যফ্রন্ট নেত্রী জেবা আমিন খান জানান, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ড. কামাল হোসেন ও নজরুল ইসলাম খান কূটনীতিকদের বিফ্রিং করেছেন। নির্বাচন নিয়ে দেশে যা হচ্ছে, সরকারি দল বিরোধী দলকে মাঠে দাঁড়াতে দিচ্ছে না এবং মামলা-হামলার বিষয়ে ব্রিফ করা হয়েছে। বিভিন্ন হামলার ভিডিও ফুটেজও দেখানো হয়েছে তাদের।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৮২২ঘ.)