নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ঐক্যফ্রন্টের, দ্রুত পুনর্নির্বাচনের দাবি

নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ঐক্যফ্রন্টের, দ্রুত পুনর্নির্বাচনের দাবি

ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ): একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রহসনমূলক উল্লেখ করে এই নির্বাচন বাতিল চেয়েছেন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সারাদেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শতাধিক প্রার্থী ভোট বর্জন করেছে। আমরা ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।

ঐক্যফ্রন্টের কোনো প্রার্থী বিজয়ী হলে তাদের ফলাফল মেনে নেবেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা এই নির্বাচনকেই বর্জন করেছি।’

এ ছাড়াও দলীয় সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না, উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে, দলীয় সরকারের অধিনে নয়, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন দেখে মনে হচ্ছে ২০১৪ সালে বিএনপি যে নির্বাচন বর্জন করেছিল সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। নির্বাচনের সার্বিক করণীয় নিয়ে আগামীকাল সোমবার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করবেন ড. কামাল হোসেন।

ঐক্যফ্রন্টের লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, তফসিল ঘোষণার পর থেকে সরকার দলীয়দের হামলায় ১৭ প্রার্থী আহত, প্রায় ১৪ হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থক আহত হন। গতকাল রাতে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সহায়তায় নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্সে ভরে রাখে বলে অভিযোগ ঐক্যফ্রন্টের। এ ছাড়া এজেন্টদের বের করে দেওয়া, বুথ তালা মেরে রাখাসহ মারধরেরও অভিযোগ করা হয়।

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের কথার প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়, এই কমিশনারও বলেছেন তার একার পক্ষে করার কিছু নেই। ঐক্যফ্রন্ট বলে, ‘অথচ নির্লজ্জের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারা দেশে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে।’

বিএনপির নেতৃত্বাধীন এই জোটের দাবি, সারা দেশে নির্বাচনী সহিংসতায় অসংখ্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং এর মধ্যে ২১ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি কেন্দ্রে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও তাদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার সমালোচনাও করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান এবং ঢাকা-৩, ৬, ৭, ৮, ৯, ১৩, ১৮ ও ১৯ আসনসহ ঢাকার প্রতিটি আসনেই ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে জানায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্ট বলে, দেশের যে ছয়টি আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হয়েছে সেখানকার অনেক কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন অকেজো থাকায় ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে।

ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, কেউ অন্য মার্কায় ভোট দিতে চাইলে তাদের বের করে দেওয়া হয়। এভাবে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নজরুল ইসলাম খান, আ স ম আবদুর রব, জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/২০৩৮ঘ.)