অনশনে অসুস্থ মাদ্রাসা শিক্ষকদের সংখ্যা বেড়ে ১৪৫

অনশনে অসুস্থ মাদ্রাসা শিক্ষকদের সংখ্যা বেড়ে ১৪৫

ঢাকা, ১৩ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষকেরা। অনশন শুরুর পঞ্চম দিনে ১৪৫ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে ২১ জনের হাতেই স্যালাইন ঝুলানো।

তাদের আন্দোলনের ১৩দিনের মধ্যে অনশনে ৫ম দিনে পর্যায়ক্রমে অসুস্থ হয়ে পড়াদের মধ্যে বয়ষ্ক শিক্ষকদের সংখ্যাই বেশি। শনিবারও অসুস্থ দজনকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়েছে।

দুপুরে আন্দোলনরত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সাথে সংহতি জানিয়েছেন, জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। একই সময় সংহতি জানান, গণ ফোরামের মহাসচিব মুস্তফা মহসিন, বাংলাদেশ রিবালিকান পার্টির চেয়ারম্যান কে এম আব্দুল হামিদ ও মহাসচিব এফ আই মিলন।

এর আগে ১০ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের পর প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি দেয় তারা। ৩১ ডিসেম্বর মাদরাসা জাতীয়করন ঘোষণার আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করার পর দাবি আদায় না হওয়াতে ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট পালন করে। এরপর ৯ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন শুরু করে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির কয়েক হাজার শিক্ষক।

অনশনের ৫ম দিনেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন আশ্বাস না পাওয়ায় জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি রুহুল আমিন চৌধুরি।

তিনি বলেন, তীব্র শীতের মধ্যে মহা সড়কের ফুটপাতে অনশনের ৫ম দিন পার হলেও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস মেলেনি। শিক্ষকদের আন্দোলনের সব ধরনের দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে বলে হুশিয়ারি দেন রুহুল আমিন।

আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, লেখাপড়া শিখে শিক্ষকতার মহান পেশায় এসেছি। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবারের ভরণপোষণের খরচ চালতে পারছি না। মানবেতর জীবন-যাপন করছি। রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণ করার দাবি জানান তারা।

সংগঠনের মহাসচিব কাজী মোখলেছুর রহমান বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মাস শেষে ২২-৩০ হাজার টাকা বেতন পান। অথচ তারা নাম মাত্র বেতন-ভাতায় একই দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি বলেন, এক হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক ২৫০০ টাকা ও সহকারী শিক্ষক ২৩০০ টাকা ভাতা পান। এ ছাড়া বাকি শিক্ষকরা ২৯ বছর যাবত বেতন-ভাতা হতে বঞ্চিত; যা এই দুর্মূল্যের বাজারে তাদের অবমাননা ছাড়া আর কিছুই নয়।

উল্লেখ্য, সারাদেশে মাদরাসা বোর্ড থেকে নিবন্ধিত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ১৮ হাজার ১৯৪টি হলেও চালু আছে ১০ হাজারের মতো। এসব মাদ্রাসায় শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে ১ হাজার ৫১৯টি মাদরাসার ৬ হাজার ৬৭৬ জন শিক্ষক নাম মাত্র ভাতা পান। প্রধান শিক্ষকেরা মাসে আড়াই হাজার টাকা ও সহকারী শিক্ষকেরা পান ২ হাজার ৩০০ টাকা। অন্যরা সরকার থেকে কোনো বেতন-ভাতা পান না।

(জাস্ট নিউজ/একে/২০০৯ঘ.)