বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

সমঝোতার পরদিনই নতুন করে শ্রমিক বিক্ষোভ - সরকার কী বলছে?

সমঝোতার পরদিনই নতুন করে শ্রমিক বিক্ষোভ - সরকার কী বলছে?

বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের প্রায় সব গ্রেডের মজুরী সংশোধনের ঘোষণা দেয়ার পরও তা মানছেন না পোশাক শ্রমিকদের অনেকে। আজও বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।

আশুলিয়ায় হাজার হাজার শ্রমিক কাজ ছেড়ে বের হয়ে গেছেন। আবার কিছু কারখানার মালিকরা ভাংচুরের আশংকায় নিজেরাই কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন।

যদিও রোববার সরকার, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠকের পর সব পক্ষ একমত হয়ে তাতে স্বাক্ষর করেছিলো।

এখন শ্রমিকদের একটি অংশ বলছে যেটুকু বেতন বেড়েছে সেটা ভাতা হিসেবে দেয়া হচ্ছে। তাদের দাবি বর্ধিত অংশ মূল বেতনের সাথে যোগ হওয়া উচিত।

নতুন করে শ্রমিক বিক্ষোভের বিষয়ে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, "প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সমাধান হয়েছে। এখন নতুন কোনো সমস্যা হলে সেটি তো জানাতে হবে লিখিত ভাবে।"

"ইতোমধ্যে হটলাইনও খোলা হয়েছে। অভিযোগ থাকলে তা জানালে ত্বরিত পদক্ষেপ নিবো।"

কিন্তু মূল বেতন না বাড়িয়ে বাড়তি ভাতা হিসেবে বেতন বাড়ানো হচ্ছে বলে যে অভিযোগ শ্রমিকরা করছেন সে বিষয়ে তিনি বলেন, "যেটা বেসিক আছে তারপরেই তো অন্য বেনিফিট যোগ হয়। এটা বেসিকের পরেই দিতে হবে।"

"কেউ যদি মনগড়া একটা দিয়ে তা অভিযোগ করলে আমরা আমলে নিবো ও কঠোরভাবে সুব্যবস্থা করবো।"

নতুন মজুরি কাঠামো তদারকি করছে সরকার?
নতুন যে মজুরি কাঠামো ঘোষণা হয়েছে সেটি সব কারখানায় বাস্তবায়ন হচ্ছে কি-না সেটা সরকার কতটা দেখছে?

জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, "এটা শ্রম অধিদপ্তর ও আইজি- আলাদাভাবে উনাদের কাছে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা তাদেরই দায়িত্ব। তাদের কাছে অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত কিছু করা যাবেনা।"

গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা লবি হিসেবে শক্তিশালী যে শ্রমিকদের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়- এ বিষয়ে তার মত কী?

এ প্রসঙ্গে মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, "শেখ হাসিনার সরকার শ্রমিক বান্ধব। ১৬শ থেকে তিন হাজার করা হয়েছে। আবার সেটাকে গত আমলে ৫৩০০ এবং এবার সেটা ৮ হাজার করা হয়েছে"।

তিনি বলেন, "এটা অনেকখানি কার্যকর হয়নি। আমি এই সাত দিনে বুঝলাম যে কার্যকরী হয়নি (অনেক কারখানায়)।"

"বিজিএমইএ [গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন] বলছে তারা এদের সদস্য না। আবার কিছু করতে গেল ওনারা তাদের পক্ষে চলে যায়। এটা আমি ফিল করছি"।

মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব?
তাহলে মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে গেলে সেটি সম্ভব হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, "কেউ শ্রমিককে ঠকাবে এটা শেখ হাসিনার কাছ থেকে যেনো আশা না করে"।

মালিকদের সাথে কিছুদিন পরপরই শ্রমিকদের যে সমস্যা হচ্ছে তার সমাধান কিভাবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে সতর্ক হতে হবে।

"সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য জানাতে হবে সঠিক জায়গায়। মালিকদেরও উচিত মজুরি কাঠামোর বাইরে না যাওয়া।"

"কোথাও সেটা হলে শ্রমিক নেতাদের উচিত তা সরকারকে জানানো এবং সরকারের উচিত সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া।"

এর বাইরে আর কোনো পথ নেই বলে মনে করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। বিবিসি বাংলা।

একে/