ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় বিতর্কিত ডিজিটাল আইনে মামলা

‘মিনার আহমেদের পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে’

‘মিনার আহমেদের পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে’

নাম মিনার আবুল কালাম। তার ফেসবুকের নাম মিনার আহমেদ। তিনি থাকেন ইটালিতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ের যৌক্তিকতা তুলে ধরে পোস্ট দেন এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত নিউজ শেয়ার করেন। এই অপরাধে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করেছে পুলিশ।

মিনার আহমেদ’র বাড়ি ফেনীর দাগনভূঁইয়া উপজেলার দক্ষিণ কলিমপুর গ্রামে। বাড়ির নাম মেহের আলী পন্ডিত বাড়ি। তিনি ইটালিতে থেকে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার কারণে তার মা মোর্শেদা সুলতানা মেরিকে (৫০) গত ১ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) বিকাল ৩টার দিকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায় দাগনভূঁইয়া থানা পুলিশ। থানায় তার মাকে প্রায় ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর থেকে তার পরিবারকে আরো বেশি হয়রানি করতেছে পুলিশ এবং স্থানীয় প্রভাবশালীরা।’ এই অভিযোগ মিনার আহমেদ’র।

শুক্রবার বিকালে (১৮ জানুয়ারি) মিনার আহমেদ ইটালি থেকে জাস্ট নিউজ বিডি ডটকম’কে বলেন, আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ফেসবুকে পোস্ট দেই এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত নিউজ ফেসবুকে শেয়ার করি। যার কারণে স্থানীয় ক্ষমতাশীন দলের প্রভাবশালীদের চাপে আমার বিরুদ্ধে ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করেছে পুলিশ। এরপর গত ১ জানুয়ারি পুলিশ আমার মাকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। প্রায় ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর মাকে ছেড়ে দেয়া হয়।’

মিনার আহমেদ বলেন, এখন বিভিন্নভাবে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালীরা আমার পরিবারকে হয়রানি করতেছে এবং আমার পরিবারকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এমতাবস্থায় আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যরা থানায় গিয়ে হুমকির প্রতিবাদে জিডি অথবা মামলা করতেও ভয় পাচ্ছে। আমার পরিবারকে পুলিশ এবং ক্ষমতাসীনরা যৌথভাবে হয়রানি করতেছে। এমতাবস্থায় আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘এর আগে আমি ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার কারণে আমার ছোট ভাইকে (নবম শ্রেনী পড়ুয়া) স্থানীয় প্রভাবশালীরা স্কুল থেকে বের করে দিয়েছিলো। তখন থেকেই তারা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে।’

এ বিষয়ে জানতে (১জানুয়ারি) যোগাযোগ করা হলে দাগনভূইঞা থানার ওসি সালেহ আহমেদ পাঠান জাস্ট নিউজ বিডি ডটকম’কে বলেন, ‘মিনার আহমেদ তার ফেসবুকে বিভিন্ন ধরণের পোস্ট দিচ্ছেন এজন্য পুলিশ বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সেই মামলায় তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় আনা হয়েছে। তাকে আটক করা হয়নি।’

উল্লেখ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এই কালো ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সংগঠন এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন বিতর্কিত আইন বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি পালন করে আসছে।

সাংবাদিকরা বলছেন, ‘এই আইন সংবিধানবিরোধী। যে আইন সোশ্যাল মিডিয়ার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়, যে আইন জনগণের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়, সে আইন অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।’

এমআই