জামিন পেলেন সেই তারা মিয়া

জামিন পেলেন সেই তারা মিয়া

চাপাতি, হকি স্টিক ও লোহার রড হাতে নিয়ে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলায় জন্মগত একটি হাত অকেজো প্রতিবন্ধী সুনামগঞ্জের তারা মিয়া আগাম জামিন পেয়েছেন। তাকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে তাকে সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

বুধবার বিচারপতি মো: রইস উদ্দিন ও বিচারপতি মো: জাহাঙ্গীর হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ তাকে জামিন দেন। তার সাথে মামলার আরো ১০ আসামি জামিন পেয়েছেন। এর মধ্যে তারা মিয়ার বড় ভাই সামস মিয়াও রয়েছেন।

বেলা ২টা ২৮ মিনিটে তারা মিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হলে আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আবিদুল হক ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন জমা দেন। আদালত পত্রিকাটি হাতে নিয়ে প্রশ্ন করেন, এর মাধ্যমে কী বোঝাতে চাইছেন। জবাবে আইনজীবী বলেন, জামিন আবেদনকারীকে নিয়ে পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। আইনজীবী বলেন, শারীরিকভাবে যার একটি হাত সম্পূর্ণ অকেজো তার পক্ষে কি পুলিশের ওপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করা সম্ভব? এ ধরনের মামলা যে সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক তার প্রমাণ এ মামলা। এরপর আদালত ছয় সপ্তাহের আগাম জামিনের আদেশ দেন।

আদালত থেকে বের হয়ে তারা মিয়া বলেন, ‘আমি খুশি। এ মামলার কারণে বাড়িতে থাকতে পারছিলাম না। এখন স্ত্রী-সন্তানদের কাছে যাব।’
তারা মিয়ার বড় ভাই সামসু মিয়া বলেন, তার ভাইয়ের বয়স ৪৫ বছর। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। জন্মগতভাবেই তার ভাইয়ের ডান হাত অকেজো। এ হাতটি অস্বাভাবিক চিকন। নাড়াতেই কষ্ট হয়। এমনকি ডান হাতে খেতেও পারেন না। বাম হাত তুলনামূলকভাবে লম্বা এবং বাঁকানো।

বুধবার জামিন শুনানির আগে তারা মিয়া একবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থতার কারণে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা পুঁটলিতে মাথা রেখে আদালত চত্বরে ঘণ্টাখানেক শুয়ে ছিলেন।

পুলিশের ওপর হামলা করার অভিযোগে গত ২৮ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন এএসআই মো: তারিকুল ইসলাম। মামলায় বলা হয় গত ২৮ ডিসেম্বর বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে জামালগঞ্জের মল্লিকপুর বাজারে আসামিরা অবৈধভাবে জড়ো হয়ে ‘ধানের শীষের’ পক্ষে মিছিল বের করে। তারা রাস্তা আটকায় এবং পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। এতে বাদিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।

একে/