রোহিঙ্গাদের ভাষানচরে স্থানান্তরের আগে জাতিসংঘের সমীক্ষা দরকার: ইয়াংহি লি

রোহিঙ্গাদের ভাষানচরে স্থানান্তরের আগে জাতিসংঘের সমীক্ষা দরকার: ইয়াংহি লি

কক্সবাজার থেকে ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের আগে জাতিসংঘকে পূর্ণ কারিগরি, মানবিক ও নিরাপত্তা সমীক্ষা চালাতে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল রেপোর্টিয়ার ইয়াংহি লি। তিনি বলেছেন, স্থানান্তরের জন্য একটি রূপরেখা চুক্তি থাকতে হবে এবং ভাষানচরে স্থানান্তরের আগে শরণার্থীদের অবশ্যই এই রূপরেখা অনুযায়ী সম্মতি থাকতে হবে।

ভাষানচরকে বসবাস উপযোগী করে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ সরকার যে সমীক্ষা চালিয়েছে তার প্রতিবেদন জাতিসংঘের দেয়ার অনুরোধ করেন ইয়াংহি লি।

বাংলাদেশে ছয় দিনের সফর শেষে শুক্রবার রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের স্পেশাল রেপোর্টিয়ার এ সব কথা বলেন। সফরকালে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন। ইয়াংহি লি রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন দেখতে কক্সবাজার যান। গত বৃহস্পতিবার তিনি ভাষানচর পরিদর্শন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ইয়াংহি লি বলেন, বাংলাদেশ সরকার কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশকে ভাষানচরে স্থানান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই চর পরিদর্শনে আমার অনুরোধে সাড়া দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। গতকাল (বৃহস্পতিবার) হেলিকাপ্টার থেকে ভাষানচর ঘুরে দেখেছি। আমি চরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও আশেপাশের এলাকা পরিদর্শন করেছি। চর রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ ও শরণার্থীদের জন্য ঘরবাড়ি তৈরিতে সরকার বিশাল কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে। এখানে অনেক সম্পদের বিনিয়োগ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কারিগরি বিশেষজ্ঞ না হওয়ায় আমি ভাষানচরের ঘরবাড়ি বা অবকাঠামো সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করব না। সরকার ভাষানচরকে বসবাস উপযোগী করে গড়ে তুলতে যে সমীক্ষা চালিয়েছে তার প্রতিবেদন জাতিসংঘকে দেয়ার জন্য আমি অনুরোধ করব। চরে কোনো শরণার্থীকে স্থানান্তরের আগে জাতিসংঘকে পূর্ণ কারিগরি, মানবিক ও নিরাপত্তা সমীক্ষা চালাতে দেয়া প্রয়োজন। স্থানান্তরের জন্য কোনো রূপরেখা চুক্তি করা হয়েছে কিনা জানি না। তবে চরে স্থানান্তরের জন্য একটি রূপরেখায় আওতায় অবশ্যই শরণার্থীদের সম্মতি থাকতে হবে।

স্পেশাল রেপোর্টিয়ার বলেন, সরকার আমাকে জানিয়েছে, কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের মতই ভাষানচরে রোহিঙ্গারা মৌলিক সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার পাবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মাছ শিকার ও খামারের মত জীবিকার সুবিধা। চরে অবাধ চলাচলের স্বাধীনতা থাকবে। চরে বসবাস করা শরণার্থীরা কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্য বা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে দেখা করার সুযোগ পাবে। তবে তারা বাংলাদেশের অন্য কোনো স্থানে যাওয়ার সুযোগ পাবে না।

আগামী বর্ষার আগে তাড়াহুড়া করে রোহিঙ্গাদের ভাষাণচরে স্থানান্তর না করার অনুরোধ জানান ইয়াংহি লি।

এমআই