ইয়াবার ‘গজব’ থেকে মুক্তি পেতে বদির দোয়া মাহফিল!

ইয়াবার ‘গজব’ থেকে মুক্তি পেতে বদির দোয়া মাহফিল!

টেকনাফকে ‘ইয়াবামুক্ত’ করতে দোয়া মাহফিল করলেন কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি।

মাহফিলে ইয়াবার ‘গজব’ থেকে মুক্ত হতে সবার সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, আমাদের একটি মাত্র কলঙ্ক, সেটা হচ্ছে ইয়াবা। এই ইয়াবার কারণে এত বদনাম।

শনিবার দুপুরে টেকনাফ পৌরসভার উপজেলা আদর্শ কমপ্লেক্স মাঠে আয়োজিত ‘মাহফিল ও শুকরিয়া সভা’য় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বর্জনেরও ঘোষণা দেন ইয়াবা চোরাচালানের অভিযোগ নিয়ে বিতর্কিত বদি।

‘উখিয়া ও টেকনাফে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায়’ এ কর্মসূচির আয়োজন করে টেকনাফ পৌরসভা।

এখানকার পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম হলেন আবদুর রহমানের চাচা। সভায় সভাপতিত্ব করেন টেকনাফ আল-জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রধান পরিচালক মাওলানা মুফতি কেফায়েত উল্লাহ শফিক।

বদি বলেন, টেকনাফকে ইয়াবামুক্ত করে কলঙ্কের দাগ মুছতে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেওয়া মাদক নির্মূলের কর্মসূচি সফল করতে আলেম সমাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহের কাছে দোয়া চেয়ে মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, টেকনাফের বাইরে কক্সবাজার জেলা শহরসহ দেশের কোথাও গেলে সকলকে বদনামের ভাগীদার হয়ে কুণ্ঠিত হতে হয়। কারণ, ইয়াবার জন্য যুব সমাজ ও জাতি ধ্বংসের পথে। বিপথে পা রাখায় অনেকের পরিবারে আজ কান্নার আহাজারি চলছে। এদের কেউ হারিয়েছেন বাবা, কেউ স্বামী আবার কেউবা সন্তান ও ভাই।

সাবেক এই সাংসদ আরও বলেন, ‘কিছু দুষ্টলোকের’ কারণে সারা দেশে ইয়াবা ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার ও প্রশাসনের এত উদ্যোগের পরও ইয়াবা চালানের অনুপ্রবেশ কেন বন্ধ হচ্ছে না, তা বড় উদ্বেগের বিষয়। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবাইকে আরও উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে।

ইয়াবা কারবারে জড়িতদের বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বদি বলেন, যারা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত তাদের কোনো অনুদান মসজিদ-মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে গ্রহণ না করতে আলেম সমাজের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের প্রতি অনুরোধ জানাই।

‘ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বলি, প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করুন। অন্যত্থায় তাদের সার্বিকভাবে বর্জন করা হবে,’ যোগ করেন তিনি।

বদি বলেন, টেকনাফকে ইয়াবামুক্ত করা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। এ জন্য সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এক কাতারে আসতে হবে। ইয়াবামুক্ত করার জন্য সবাইকে শপথ নিতে হবে।

গতবছর শেষ দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা ইয়াবা কারবারিদের হালনাগাদ তালিকায় যে ৭৩ জনকে ‘শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, তার শীর্ষে ছিলেন তখনকার সাংসদ আবদুর রহমান বদি।

পাশাপাশি এই তালিকায় টেকনাফের সাবেক ও বর্তমান আরও ২২ জনপ্রতিনিধির নাম আছে।

শুকরিয়া সভায় আবদুর রহমানের সঙ্গে মঞ্চে তাদের চারজন উপস্থিত ছিলেন।

তারা হলেন টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান মো. রফিক উদ্দিন, বাহারছড়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন, আবদুর রহমানের ভাই ও টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান।

জানা গেছে, বদিসহ ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকাভুক্ত জনপ্রতিনিধিরা পুলিশের খাতায় পলাতক হলেও শুকরিয়া সভার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন। যদিও টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে।

এমজে/