ছাত্রলীগ কর্তৃক ছাত্রী নিপীড়ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অবরুদ্ধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অবরুদ্ধ

ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ): সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের ‘নিপীড়নের’ প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে তার কক্ষের সামনে ঘেরাও করে রেখেছে আন্দোলনকারীরা।

তাদের দাবি, নিপীড়নে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কার করতে হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ‘হামলার’ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং আন্দোলনকারীদের নেতা মশিউর রহমান সাদীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে তারা।

পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।

সেখান থেকে বেলা ১টা দিকে তারা মিছিল নিয়ে প্রক্টর অফিস ঘেরাও করেন। বেলা ৪টারও সময়ও প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী তার কক্ষের সামনে শিক্ষার্থীদের ঘেরাওয়ের মধ্যে আটকে ছিলেন। ঢাকার সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন একদল শিক্ষার্থী। ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী’ব্যানারে আন্দোলনকারী এই শিক্ষার্থীদের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির ছাত্র মশিউর।

সোমবার এই শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে সেথান থেকে মশিউরকে ভেতরে ঢুকিয়ে নেন ছাত্রলীগের নেতারা। পরে তাকে নেওয়া হয় শাহবাগ থানায়। সেদিন ‘হামলাকারী’ ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাত্রীদের নিপীড়ন করে বলেও আন্দোলনকারীদের অভিযোগ।

এর প্রতিবাদেই বুধবার তাদের এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভের কর্মসূচি ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও এ কর্মসূচিতে দেখা যায়।

আন্দোলনকারীরা প্রক্টর অফিস ঘেরাও করার পর ভেতর থেকে ফটকে তালা দেওয়া দেখে তা ভেঙে ফেলেন। পরে প্রক্টর তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে কলাভবনের গেইটে উত্তেজিত ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন।
শিক্ষার্থীরা এ সময় তাদের তিন দফা দাবি প্রক্টরের সামনে তুলে ধরেন। কেউ কেউ তার পদত্যাগের দাবিতে স্লোগানও দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের ‘হামলা’ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করলেও সরাসরি কোনো উত্তর দেননি অধ্যাপক রব্বানী।

যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে তিনি ভেতরে চলে যেতে চাইলে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তার পথরোধ করে প্রক্টর অফিসের গেইটে বসে পড়েন।

আন্দোলনকারীদের স্লোগানের মধ্যে প্রায় বিশ মিনিট সেখানে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকেন প্রক্টর। তারপর আধাঘণ্টার সময় চেয়ে নিয়ে নিজের কক্ষে যান।

আধা ঘণ্টা পর বেরিয়ে এসে তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্র“তি দিলেও শিক্ষার্থীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন রহমান এবং ছাত্রী নিপীড়নে জড়িত অন্যদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কারের দাবিতে তারা সেখানে অবস্থান চালিয়ে যেতে থাকেন।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১৭০০ঘ.)