আগুনে পোড়া ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে এখনো শত শত ক্যামিকেলের জার

আগুনে পোড়া ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে এখনো শত শত ক্যামিকেলের জার

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ আগুনের সূত্রপাত গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে হয়েছে। তবে সেই আগুন কেমিক্যালের কারণেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তদন্ত কমিটি। এদিকে আগুনে পুড়ে যাওয়া হাজী ম্যানশন নামে ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে এখনো শত শত কেমিক্যালের জার ও কন্টেইনার মজুদ করা আছে।

যা দেখে এটা স্পষ্ট, ওই ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডটি কেমিক্যালের গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করা হতো। আর মজুদ করা এই কেমিক্যালে আগুন লাগলে তার ভয়াবহতা কতগুণ বেড়ে যেত সেটা হিসাব করা কঠিন।

শুক্রবার বিকালে আগুনে পুড়ে যাওয়া হাজী ম্যানশন ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে শত শত কেমিক্যাল ভর্তি জার ও কন্টেইনার দেখা যায়। তবে সেসব জার ও কন্টেইনারে কী ধরনের কেমিক্যাল রয়েছে প্রাথমিকভাবে তা জানা যায়নি।

আগুন লাগার পর থেকেই ওই ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডের গেটটি তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। গেটটি দিয়ে ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, আন্ডারগ্রাউন্ডের অন্ধকারের মধ্যে অনেক রকমের জার ও কন্টেইনার এবং বস্তাতে কিছু দ্রব্য মজুদ করা রয়েছে। এরপর ভালোভাবে লক্ষ করে দেখা যায়, দ্রব্যগুলো আসলে বিভিন্ন কেমিক্যাল বা রাসায়নিক।

এই বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ওই ভবনের মালিক বা কর্তব্যরত কাউকেই পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে স্থানীয়রা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১১ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে কমিটির অন্যতম সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এসএম জুলফিকার রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগুনের সূত্রপাত গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে। কিন্তু ভবনের ভেতরে অনেক কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থ ছিল। সেগুলোর কারণেই আগুন এত দ্রুত ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ে।’

কী ধরনের কেমিক্যাল ছিল জানতে চাইলে জুলফিকার রহমান বলেন, ‘ওই ভবনে গ্যাস লাইটার রিফিলের পদার্থ ছিল, যা নিজেই একটা দাহ্য পদার্থ। এ ছাড়া সেখানে পারফিউমের বোতলে রিফিল করা হতো। আগুন লাগার পর পারফিউমের বোতলগুলো বোমের মতো বিস্ফোরণ ঘটেছে।এসবই কিন্তু এক ধরনের কেমিক্যাল। আর এই ক্যামিক্যালের জন্যই আগুন নিয়ন্ত্রণে এত বেশি সময় লেগেছে।’

আন্ডারগ্রাউন্ডে মজুদ কেমিক্যাল সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাজাহান শিকদার বলেন, ‘ভবনের আন্ডার গ্রাউন্ডে যে পরিমাণ কেমিক্যাল ছিল সেখানে আগুন লাগলে ভয়াবহতা বহুগুণ বেড়ে যেত। ভবনটি সাথে সাথেই ধ্বসে পড়ত। তাই আগুন নিয়ন্ত্রণের সময় আমরা চেস্টা করেছি যেন কোনোভাবেই আগুন ভবনের নিচে না যায়।’

গত বুধবার রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৮১ জনের প্রাণহানি ঘটে। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এমআই