ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলাম মামুনের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে।
রবিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এ রায় কার্যকর করা হয়।
কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান জানান, উচ্চ আদালতের রায় কারাগারে আসলে বিধি মোতাবেক সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রবিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে সাইফুল ইসলামের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। আসামি সাইফুলের বাড়ি বাগেরহাট জেলার শরণখোলার মধ্য খোন্তাকাটা গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত আব্দুল মোতালেব হাওলাদার। তিনি ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এ কারাগারে বন্দী আছেন।
কাশিমপুর কারাগার সূত্র জানায়, লাল কাপড়ে মোড়ানো ফাঁসির পরোয়ানা রবিবার কারাগারে পৌঁছায়। পরে কারা কর্তৃপক্ষ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের পর ফাঁসির মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করেন। ফাঁসি কার্যকর করার জন্য জল্লাদ রাজুসহ কয়েকজনকে প্রস্তুত রাখা হয়।
ফাঁসি রায় কার্যকরের আগে রাত নয়টা ২০ মিনিটের দিকে সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মো. মঞ্জুরুল হক, গাজীপুর জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মশিউর রহমান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মোহাম্মদ শরিফুর রহমান, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবু নাসার উদ্দিনসহ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসে উপস্থিত হন। পরে তাদের উপস্থিতিতে রাত ১০টা ১ মিনিটে জল্লাদ রাজুর হাতেই সাইফুলের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এসময় সৌদি দূতাবাসের একজন কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।
ফাঁসি কার্যকরের পর কারা ফটকে এসে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন হাই সিকিউরিটি কারাগারের জেল সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ। তিনি জানান, রাত ১০টা এক মিনিটে সাইফুল ইসলামের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সাইফুলের মরদেহ নেয়ার জন্য বাগেরহাট থেকে ১৫ জন স্বজন দুপুরে কারাগারে আসেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাইফুল ইসলামের মরদেহ এ্যাম্বুলেন্সে করে তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। সাইফুলের মা আলেয়া বেগম কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লাশ গ্রহণ করেন। এসময় তার মামাত ভাই তামিম ও মামা সোহাগ উপস্থিত ছিলেন।
২০১২ সালের ৫ মার্চ ঢাকার গুলশানে কূটনৈতিক এলাকায় সৌদি দুতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলীকে গুলি করা হয়। পরদিন ভোরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় খালাফ আল আলী।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করে। ওই মামলায় ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। পরে ২০১৩ সালে হাইকোর্ট সাইফুল ইসলাম মামুনের মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং তিন জনের মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও একজনকে খালাস দেন।
এমআই