রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির কথা স্বীকার করলেন সিইসি নিজেও

রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির কথা স্বীকার করলেন সিইসি নিজেও

রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির কথা এবার স্বীকার করলেন স্বয়ং প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের বিরোধীদলগুলো রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছে। আর তা নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলেও।

জাতীয় নির্বাচনে অনিয়মের কথা উঠলেও তা সাফ না করে দিয়েছিলেন সিইসি, কারো কথাতে তিনি কান দেননি। অথচ শুক্রবার সেই সিইসি ঢাকার একটি অনুষ্ঠানে নিজেই রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির কথা স্বীকার করলেন। বললেন-রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির জন্য কারা দায়ী, সেটা বলার সুযোগ নির্বাচন কমিশনের নেই। কী কারণে এগুলো হচ্ছে তা বলারও কোনো সুযোগ নেই।

যে ইভিএম নিয়ে পৃথিবীর সব জায়গায় বিতর্ক ভোট চুরি বন্ধে সাফাই গাইলেন সেই বিষয়টির পক্ষেই।

সিইসি বলেন, ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখার অনিয়ম দূর করতে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার প্রয়োজন। সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ (টিওটি) কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

নূরুল হুদা বলেন, সমাজে একটা অনিয়ম প্রবেশ করে, সেটাকে প্রতিহত করার জন্য আরেকটা আইন তৈরি করা হয়। তাই আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার সুযোগ বন্ধে ইভিএম চালু করা হবে।

রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির জন্য কারা দায়ী, সেটা বলার সুযোগ নির্বাচন কমিশনের নেই বলে জানান সিইসি।

তিনি বলেন, কারা সেজন্য দায়ী, কাদের কী করা প্রয়োজন, সেই শিক্ষা দেয়ার ক্ষমতা, যোগ্যতা কমিশনের নেই। কী কারণে এগুলো হচ্ছে তা বলারও কোনো সুযোগ নেই। সবাই মিলে বিষয়টি দেখতে হবে। তাহলেই অবস্থার উন্নতি হবে।

তিনি বলেন, গোপনীয় কাগজ নেই, গোপনীয় সলাপরামর্শ নেই, গোপনীয় কোনো বিষয় নেই। শুধু গোপনীয় একটি কক্ষ আছে, যেখানে ভোটাররা ভোট দেবেন। এ ছাড়া নির্বাচন পরিচালনার সবকিছু স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন। তথ্য-উপাত্ত, পরিবেশ-পরিস্থিতি সবকিছু ভোটার ও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।

রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করার ব্যাপারে ইসি কর্মকর্তাদের ভূমিকা আছে বলেও জানান সিইসি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করার ব্যাপারে আপনাদের ভূমিকা আছে। সুষ্ঠু নির্বাচনমুখী করার ভূমিকাও আপনাদের রয়েছে। আপনাদের আচারে, আচরণে, ব্যবহারে, কার্যক্রমে, যখন একটা অবস্থান সৃষ্টি হবে, তখন নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতি ভালো হয়ে যাবে।

নূরুল হুদা বলেন, যারা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকবেন, তাদের কোনো পক্ষ নেই। তাদের পক্ষ হলো, নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। কে কোন দল করে, কার প্রভাব বেশি, কার রাজনৈতিক পরিচয় কী– এসব মোটেও বিবেচ্য বিষয় নয়। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের যেসব কর্মকর্তা রিটার্নিং কর্মকর্তা/সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, তারা সবচেয়ে বেশি ভালো করবেন বলেও মনে করেন সিইসি। তিনি বলেন, আইনকানুন, নিয়ম সব আপনাদের জানা। আপনারা কতটুকু সাহসিকতার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেটাই বিষয়।

এমআই/জিএস/