ডাকসুর পুনঃনির্বাচনের আবেদন, রাশেদকে ডেকেছে তদন্ত কমিটি

ডাকসুর পুনঃনির্বাচনের আবেদন, রাশেদকে ডেকেছে তদন্ত কমিটি

ভোট কারচুপি, রাতে ব্যালট মেরে বাক্সভর্তি করে রাখা, কেন্দ্র দখল, আধিপত্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) পুনর্নির্বাচনের দাবিতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জিএস পদে নির্বাচন করা রাশেদ খানকে ডেকেছে তদন্ত কমিটি।

ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম তদন্তে গঠিত কমিটি আগামী রোববার রাশেদকে অভিযোগের প্রমাণসহ হাজির হতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ আন্দোলনের জিএস প্রার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, আমি গতকাল দুপুর ২টায় ২০টি সংযুক্তি আকারে তথ্য প্রমাণসহ অভিযোগ জমা দিয়েছি। এরপর তদন্ত কমিটি থেকে বিকালে ফোন করে বলা হয়, ‘আপনার সব অভিযোগ তথ্যপ্রমাণসহ আমরা দেখেছি। আমরা আগামী রোববার, দুপুর ১২টায় প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার রুমে বৈঠকে বসব৷ আপনাকে সেখানে আসতে বলা হলো। আমরা আপনার অভিযোগগুলো শুনব।’

প্রসঙ্গত দীর্ঘ ২৮ বছরের অচলায়তন ভেঙে গত ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে নির্বাচনের দিনই নানা অনিয়ম, কারচুপি আর জালিয়াতির অভিযোগ এনে ছাত্রলীগ ছাড়া সব প্যানেল নির্বাচন বর্জন করে। এর পর থেকেই পুনর্নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার ছিল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও স্বতন্ত্র প্যানেলগুলো।

বিভিন্ন প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্যানেলগুলো নির্বাচনের পর একাধিকবার নির্বাচন বাতিলের দাবিতে ঢাবি ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। তবে বৃহস্পতিবার ডাকসু নির্বাচনের জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রদানের শেষ দিনে পুনর্নির্বাচনের সুপারিশ করে আবেদন করেন ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদ খান।

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০১৯ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বরাবর লেখা চিঠিতে রাশেদ খান অভিযোগ করেন, ডাকসু নির্বাচনে সংগঠিত হওয়া জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে দেশের সব খ্যাতনামা গণমাধ্যমে, যা ভোটের দিন আমি স্বচক্ষে দেখেছি এবং জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের প্রমাণগুলো এই আবেদনের সংযুক্তি অংশে ২০টি সংযুক্তি যুক্ত করেছি। আমি মনে করি, এসব জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের ঘটনা এড়িয়ে যেতে পারে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তিনি দাবি করে বলেন, 'আমার দাখিলকৃত প্রমাণসমূহ সাপেক্ষে, আমার পদের সব ভোট সাংবাদিকদের সামনে পুনঃগণনা করতে হবে। শুধু তাই নয়, এই ডাকসু নির্বাচন ২০১৯-এর পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পুনরুদ্ধার ও ছাত্রসমাজের দাবিকে আমলে নিয়ে ডাকসু নির্বাচনের ফলকে বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের ফের দাবি করেন রাশেদ।

১১ মার্চের ডাকসু নির্বাচনে ২৫টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই জয় পায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। ভিপি নির্বাচিত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুর, জিএস নির্বাচিত হন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং এজিএস নির্বাচিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন।

এমজে/