রোগী সেজে চিকিৎসক অপহরণ শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযান

রোগী সেজে চিকিৎসক অপহরণ শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযান

ঢাকার মিরপুর থেকে অপহৃত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে টাঙ্গাইলের মধুপুর ভাওয়াল বন এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব-৪ এর একটি দল। এসময় অপহরণের সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।

র‌্যাব-৪ এর সিনিয়র এএসপি সাজ্জাদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরে অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার ও ছয় অপহরণকারীকে আটক করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার এ অপহরণ ও উদ্ধারের বিস্তারিত তুলে ধরে র‌্যাব। গত ৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১১টায় চিকিৎসার নাম করে মিরপুর-১০ নাম্বার থেকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক মোনায়েমুল বাশারকে মধুপুর ভাওয়াল বনে এক বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছামাত্র অপহরণকারীরা তার হাত ও চোখ মুখ বেঁধে ফেলে। তার উপর নির্যাতন চালানো হয়।

এ সময় তাকে মারধর ও চিৎকারের শব্দ মোবাইল ফোনে তার পরিবারকে শুনিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে।

মুক্তিপণের টাকা না দিলে হত্যা করারও হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। এরই মধ্যে হোমিও ডাক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে কিছু টাকাও দেয়া হয় অপহরণকারী চক্রের দেয়া বিকাশ নাম্বারে। র‌্যাব জানায়, অপহরণকারীরা তাদের মহিলা সদস্য দিয়ে ওই চিকিৎসকের নাম্বার জোগাড় করে বেশ আগে থেকেই ফোনে চিকিৎসা সংক্রান্ত কথা বলে আসছিলেন। অপহরণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব কাজ শুরু করে। ৩ এপ্রিল রাত ৮টা থেকে ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অভিযান চালায় ভাওয়াল বন এলাকায়।

এক পর্যায়ে অপহৃত হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার মোনায়েমুল বাশারকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে ৬ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের কাজে ব্যবহৃত সীমসহ চারটি মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা হয়। এছাড়া মুক্তিপণের ২৭ হাজার ৫০০ টাকাও উদ্ধার করা হয়। এ অপহরণের সঙ্গে ১০ জন জড়িত। গ্রেপ্তারকৃত ছয়জনসহ এরা হলো, মো. আব্দুস সালাম (৫৫), আলমগীর হোসেন (১৮), ফয়েজ উদ্দিন(৩২), মো.ফয়সাল (১৮), আবদুল হালিম (৫২), বিল্লাল হোসেন (৩৮), আমিনুল ইসলাম ওরফে সোহরাব (৩৮), সঞ্জিব (৩৫) , আলিম (৩৩) ও তারা বিবি ওরয়ে সানু আক্তার (৩২)। এরমধ্যে তারা বিবি, সোহরাব, সঞ্জিব ও আলিম পলাতক রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা জানায় এর মূল হোতা সোহরাব।

তার সোহরাব বাহিনী হিসাবে পরিচিত। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, গত ১০ বছর ধরে বিভিন্ন পন্থায় বড় বড় ব্যবসায়ী, পেশাজীবি ও চাকুরীজীবিদের টার্গেট করে মোবাইল ফোনে মহিলা সদস্যের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদ পাতে। এছাড়া কাউকে কাউকে সুন্দরী আদিবাসী নারীর প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন কৌশলে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল। হোমিও চিকিৎসক অপহরণ ঘটনা সম্পর্কে র‌্যাব জানায়, অপহরণ চক্রের মহিলা সদস্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চিকিৎসা নেয়ার উদ্দেশে ডাক্তারের চেম্বারে আসে। তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে। তার মোবাইল ফোন নেয়। পরে এক পর্যায়ে বিভিন্ন রোগি তার মাধ্যমে চিকিৎসা করাবে বলে বিভিন্ন সময় ফোনে যোগাযোগ করতে থাকে। এক পর্যায়ে সুন্দরী মহিলার প্রলোভন দেখিয়ে তার বাসায় আসতে বলে। সেখানে গেলে তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করে।

এমজে/