ইলিশের বাজারে আগুন

ইলিশের বাজারে আগুন

গত এক মাস প্রায়-প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো স্থান থেকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া যাচ্ছে। অগ্নিকা-গুলোয় পুড়ছে ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ অফিস-আদালত। এমন অবস্থার মধ্যেই সমাগতপ্রায় বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। এ উৎসব ঘিরে বাজারেও ছড়িয়ে পড়েছে আগুনের আঁচ। বৈশাখী উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ ইলিশ। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ইলিশের দাম বেড়েছে হালিতে ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা।

দাম বেড়েছে অন্য মাছেরও। বৈশাখ-উৎসব ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এ দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কারওয়ানবাজার, শান্তিনগর, মালিবাগসহ রাজধানীর অন্য বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতিকেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। মাঝারি আকারের ইলিশের হালি আড়াই হাজার থেকে দুই হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত। ৮০০ গ্রাম ওজনের এক হালি ইলিশের দাম হাঁকা হচ্ছে প্রায় ৪ হাজার টাকা। আধা কেজি ওজনের ইলিশের হালির দাম হাঁকছে ১ হাজার ৬০০ টাকা।

এ ছাড়া এক কেজি থেকে বেশি ওজনের একটি ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা। কারওয়ানবাজারের আল্লাহর দান সি ফিশ দোকানের ইলিশ বিক্রেতা মো. শুক্কুর আলী বলেন, গত বুধবারও মাঝারি আকারের ইলিশের হালি ছিল ২ হাজার টাকা, সে মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৭০০ টাকায়। হালিতে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বেড়েছে, সামনে আরও বাড়বে। কাঁচা (তাজা) মাছের পাশাপাশি হিমাগারে রাখা ইলিশের দামও একই হারে বেড়েছে বলে জানান আরেক বিক্রেতা মোহাম্মদ কামাল।

তিনি বলেন, হিমাগারে রাখা মাঝারি আকারের ইলিশের হালির দাম ২ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা। বছরের এ সময় জাটকা ধরা নিষেধ থাকায় বাজারে ইলিশ কম, তাই দাম বেশি বলে জানালেন বিক্রেতারা। তবে বৈশাখকে সামনে রেখে কাঁচা ইলিশের দাম; বিশেষত বড় ইলিশের দাম আকস্মিকভাবে অনেক বেড়েছে বলে জানালেন আশিকুর রহমান নামের এক ক্রেতা।

তিনি জানান, এক কেজির ওপর ওজনের একটি ইলিশের দামই চাওয়া হচ্ছে প্রায় তিন হাজার টাকা। এভাবে চললে ইলিশ কেনা যাবে না। অন্যদিকে বৈশাখে ইলিশের বিকল্প হিসেবে কিনছেন রুই, কাতলাসহ অন্য বড় মাছ। সেসব মাছের দামও বাড়তি। রুই কাতলা মাছে গড়ে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। রুই কেজি ৩০০ থেকে ৪০০, কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০, বোয়াল ৬০০ থেকে ৭০০, আইড় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজি, মাছ, মাংসের বাজারও দুই মাস ধরে চড়া। ব্রয়লার মুরগির কেজি আগের মতোই ১৬৫ টাকা থেকে ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

লাল লেয়ার মুরগি ও পাকিস্তানি কক মুরগির দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২১০ থেকে ২২০ এবং পাকিস্তানি কক মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে। গরুর মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে ডিমের দাম না বাড়লেও খুচরা বিক্রিতে মিলছে না স্বস্তি। বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। যেখানে পাইকারিতে ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, সেখানে একটি ডিম বিক্রি হচ্ছে দশ টাকায়।

এমজে/