ইবিতে আন্দোলনরত ২২ শিক্ষার্থী আটক, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

ইবিতে আন্দোলনরত ২২ শিক্ষার্থী আটক, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনকারী ২২ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ক্যাম্পাসের ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে অনশন থেকে শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ক্যাম্পাসে সকল প্রকার মিটিং-মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে বন্ধ রয়েছে পরীক্ষা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিজ্ঞান অনুষদ বিভক্ত করে তিনটি অনুষদ করে কর্তৃপক্ষ। এতে বিজ্ঞান, জীব বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ হিসেবে বিভক্ত হয়। এর ফলে ২০১৮-১৯ ও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি প্রদান করার কথা বলা হয়।

এর প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার থেকে ক্যাম্পাসের ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেন। তাদেরও ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি প্রদান করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার সারা দিনের আন্দোলন শেষে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় রাতেও অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মমতাজুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

পরে রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে র‌্যাব ও পুলিশ গিয়ে ২২ জনকে আটক করে। এর পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং ছাত্র উপদেষ্টা ও ডিনকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করা হয়।
এদিকে, বুধবার সকাল ৯টা থেকে ক্যাম্পাসে সকল প্রকার মিটিং, মিছিল ও সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সাথে শিক্ষার্থী বহনকারী পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্ব-স্ব পরিচয়পত্র বহনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ফলে ক্যাম্পাসের সকল বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের অভিভাবক। অভিভাবক হয়ে পুলিশ দিয়ে আমাদের আটক করেছে। যা ন্যাক্কারজনক।’

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ বলেন, ‘আন্দোলনকারী ২২ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আনিছুর রহমান বলেন, ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে সব ধরনের মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক একে আজাদ লাভলু বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি বিভাগের কোর্স ফাইনাল পরীক্ষা অনিবার্যকারণঃবশত বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পেছনে ভিন্ন কোনো কারণ রয়েছে। কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলার গোয়েন্দাদের সাথে কথা হয়েছে, তারা আসল ঘটনা উদঘাটন করতে কাজ করছে।’

এমআই