চলন্ত বাসে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের সেবিকা শাহিনুর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীবাসী। এই বর্বরোচিত ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে করেছে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শত শত এলাকাবাসী মিছিল নিয়ে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে হাজির হন। সেখানে বিক্ষোভ শেষে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজন অংশ নেন। আর সবার কণ্ঠই ছিল এ নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার।
প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন থেকে তানিয়ার ধর্ষক ও হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার দাবি করা হয়। একই সাথে অবৈধ স্বর্ণলতা পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে পুনর্বাসনেরও দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে নিহত তানিয়ার ভাই কফিল উদ্দিন সুমন উপস্থিত হয়ে তার বোনের হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করে বিচার কাজ দ্রুত শেষ করার আহ্বান জানান।
কর্মসূচির মূল উদ্যোক্তা কটিয়াদী রক্তদান সমিতি হলেও এতে উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন উপস্থিত হয়ে একাত্মতা প্রকাশ করে।
মানববন্ধনে কটিয়াদী রক্তদান সমিতির সমন্বয়ক বদরুল আলম নাঈমের সঞ্চালনায় বক্তৃব্য রাখেন, কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ আজিজুল হক, কটিয়াদীর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব আইন উদ্দিন, শ্রমিকনেতা আব্দুর রহমান রুমী, কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তানিয়া সুলতানা হ্যাপি, জেলা সিপিবি সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ডা: মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, মুন্সী আবদুল হেকিম কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীরসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
উল্লেখ্য, ইবনে সিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র নার্স শাহিনুর আক্তার তানিয়া গত সোমবার বিকালে নিজ গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দর থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে আসার পর তানিয়া ব্যতীত বেশির ভাগ যাত্রী বাস থেকে নেমে পড়ে। বাসটি কটিয়াদী ছাড়ার পর তানিয়া বাসটির ড্রাইভার, হেলপারসহ কয়েকজনের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হন।
একপর্যায়ে অভিযুক্তরা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তানিয়াকে হত্যা করে। পরে লাশ কিশোরগঞ্জ-ভৈরব পাকা সড়কে বাজিতপুর উপজেলার গজারিয়া-বিলপাড় নামক স্থানে ফরিদ মিয়ার কলাবাগানের সামনে ফেলে আসামিরা বাস নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আল আমিন নামে একজন তানিয়ার লাশ কটিয়াদী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে সটকে পড়ে।
এমজে/