পাটকল শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট-অবরোধ চলছে

পাটকল শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট-অবরোধ চলছে

বকেয়া মজুরিসহ বিভিন্ন দাবিতে দেশের সব সরকারি পাটকল শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। তারা রেল ও সড়ক পথ অবরোধের ঘোষণাও দিয়েছে।

বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের সভাপতি এবং খুলনার প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক সর্দার মোতাহার উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কাল (আজ) থেকে দেশের সব কটি পাটকলের শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাবে। বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রেল ও সড়ক পথ অবরোধ করা হবে।’

বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক ও ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মো. মুরাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সোমবার সকাল থেক দেশের সব সরকারি পাটকলে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু হবে। পাশাপাশি বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।’

গতকাল রবিবারও যথারীতি কর্মবিরতি এবং সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খালিশপুরের নতুন রাস্তার মোড়ে শ্রমিকরা সড়ক ও পাশেই রেলপথ অবরোধ করে। সড়কেই তারা সমাবেশ, নামাজ আদায় ও ইফতারি করেছে।

বকেয়া মজুরি, মজুরি কমিশন, গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বদলি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণসহ ৯ দফা দাবিতে গত ৫ মে সন্ধ্যা থেকে বিজেএমসি (বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন) খুলনা অঞ্চলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। ৭ মে থেকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। বিজেএমসি খুলনা অঞ্চলের খালিশপুরের প্লাটিনাম, ক্রিসেন্ট, খালিশপুর, দৌলতপুর ও স্টার; আটরা শিল্প এলাকার আলিম ও ইস্টার্ন এবং নওয়াপাড়া এলাকার জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে।

পাট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি-বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ-গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশোধ, চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহাল, সব মিলে সেটআপের অনুকূলে শ্রমিক-কর্মচারীদের শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ ও স্থায়ীসহ ৯ দফা দাবিতে গত ৫ মে দুপুর থেকে একে একে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা।

এর আগে ২, ৩ ও ৪ এপ্রিল দেশের সব পাটকলে একযোগে ৭২ ঘণ্টা ধর্মঘট এবং চার ঘণ্টা করে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। ১৫ এপ্রিল ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘটের কর্মসূচি শুরু হলে বিজেএমসি চেয়ারম্যান ও শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে পাটকল শ্রমিক নেতাদের সমঝোতার ভিত্তিতে শ্রমিকরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেয়। কিন্তু প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী মজুরি না পাওয়ায় শ্রমিকরা আবার বিক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নামে।

এমজে/