‘পানির নামে বিষ পাই, বিলের টাকা ফেরত চাই’

‘পানির নামে বিষ পাই, বিলের টাকা ফেরত চাই’

সুপেয় পানির দাবিতে রাজধানীর জুরাইন এলাকা থেকে শনির আখড়া পর্যন্ত পদযাত্রা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ১১টায় পূর্ব জুরাইনের মিষ্টির দোকান এলাকা থেকে এই পদযাত্রা শুরু হয়। এসময় ‘কল থেকে সরাসরি পানি খেতে চাই’,‘ওয়াসার পানি রোগের কারণ-দিতে হবে ক্ষতিপূরণ’,‘পানি ফেলে দেবো বিল-বিষ পেলে বিল দেবো না’, ‘পানির নামে বিষ পাই- বিলের টাকা ফেরত চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে পুরোএলাকা প্রদক্ষিণ করেন তারা।

পদযাত্রাটি মিষ্টির দোকান থেকে শুরু হয়ে খালপাড়, মুরাদপুর হাইস্কুল রোড, মুরাদপুর জিরো পয়েন্ট, কুদার বাজার-দনিয়া, গোয়ালবাড়ি মোড় হয়ে শনির আখড়ার সিএনজি স্ট্যান্ডে এসে শেষ হয়।

এসময় ওয়াসার নিরাপদ পানি আন্দোলনের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখানে পানির ব্যাখ্যা করছি না। কারণ, ওয়াসার পানির ব্যাখ্যা করা যাবে না। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) আমরা পদযাত্রাকে সফল করার জন্য লিফলেট বিলি করেছিলাম। আমরা প্রথমত মানুষ এবং রাষ্ট্রকে জানাতে চাই যে, এই এলাকায় আমরা মানুষ থাকি। দ্বিতীয়ত আমরা ওয়াসার কল খুলে গ্লাস দিয়ে পানি খেতে চাই। রাষ্ট্র যদি ন্যূনতম সভ্য হতো, তাহলে তোড়জোড় করে এতদিনে নেমে যেত। পানির ওপর নাম জীবন এই বোধ রাষ্ট্রের নেই। রাষ্ট্রকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর জন্য আমরা এখন মানুষের ওপর ভর করছি। তারই অংশ হিসেবে আজকের এই কর্মসূচি।’

এসময় ওয়াসার নিরাপদ পানি আন্দোলনের সদস্য মনিরুল ইসলাম ফরাজী বলেন, রাজধানীতে ৫৯টি এলাকার পানি দূষিত বলে ওয়াসা যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে এটা একটা দায়সারা প্রতিবেদন মাত্র। প্রকৃতপক্ষে পুরো রাজধানীর কোথায়ও শতভাগ সুপেয় পানি নেই। রাজধানীর অধিকাংশ যায়গার পানিই ব্যবহার অনুপযোগী।

মুরাদপুরের বাসিন্দা তামিম জামশেদ কিশোর বলেন, ‘আমরা গত ১০ বছর ধরে ওয়াসা থেকে যে পানি পাই, তা খাওয়ার যোগ্য না। এমনকি ব্যবহারেরও যোগ্য না। আমরা তাই আশেপাশের এলাকার মানুষ সবাই একত্রিত হয়েছি। আশা করি, ওয়াসা আমাদের ভালো পানি দেবে। ভালো পানি না দিলে আমরা বিল দেওয়া বন্ধ করে দেবো। এমনকি আমরা ক্ষতিপূরণ চাই।’

দনিয়া এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, আমরা এই এলাকার মানুষ নিরাপদ পানির দাবিতে রাস্তায় নেমেছি।

রাসেল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ওয়াসার যে পানি পাই, সেটা কোকের মতো কালো রংয়ের। এই পানি আমরা ব্যবহার করতে পারি না, খেতেও পারি না। আমাদেরকে স্থানীয় মসজিদের গভীর নলকূপের পানির ওপর নির্ভর করতে হয়। অথচ আমরা প্রতি মাসে ওয়াসাকে টাকা দিচ্ছি। কিন্তু তারা আমাদের নিরাপদ পানি দিচ্ছে না। এই কালো পানির কারণে আমাদের মাথার চুল পড়ে যাচ্ছে, চর্মরোগসহ নানা রোগ হচ্ছে। আমরা ওয়াসার কাছে দাবি করবো, আমাদের যেন সুন্দর পরিষ্কার পানি সরবরাহ করে।

এমআই