পিতা পুত্রের বয়সের পার্থক্য দেড় বছর

পিতা পুত্রের বয়সের পার্থক্য দেড় বছর ফাইল ছবি

কুড়িগ্রামে জাতীয় পরিচয়পত্র জাল করে বয়স কমিয়ে তিন বছরের উপর ধরে মাদ্রাসায় চাকুরী করে আসছেন আনোয়ারুল ইসলাম ও কাবিল উদ্দিন নামে দুই পিয়ন। বয়স কমাতে গিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম তার পূত্রের চেয়ে মাত্র দেড় বছরের বড় বলে প্রতিয়মান হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে জেলার উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের তবকপুর আবু বকর সিনিয়র মাদ্রাসায়। এমন অনিয়মের বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তারা জানলেও কেউ কোন ব্যবস্থা নেননি বলে সহকর্মীরা সাংবাদিকদের জানান।

অনুসন্ধান ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একই ইউনিয়নের খামার তবকপুর গ্রামের মৃত: উমর আলীর পূত্র আনোয়ারুল ইসলাম ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে তবকপুর আবু বকর সিনিয়র মাদ্রাসায় পিয়ন পদে নিয়োগ পান। এনআইডি কার্ড অনুযায়ী তার জন্ম ২৭শে ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮ সালে। কিন্তু তথ্য গোপন করে জাতীয় পরিচয়পত্র এনআডি জালের মাধ্যমে তিনি বয়স কমিয়ে জন্ম সাল দেখান ২৭শে ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ সাল। যেখানে তার বড় পূত্র আবু সুফিয়ানের জন্ম সাল ১১ই ডিসেম্বর ১৯৯৬। ফলে পূত্রের কাছাকাছি এসে দাঁড়ায় তার বয়স। একই ধরণের অনিয়ম করে অপর পিয়ন কাবিল উদ্দিন নিয়োগ পেয়েছেন বলে শিক্ষকগণ জানান।

দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া কাগজপত্রাদির মাধ্যমে চাকরি নিয়ে নিয়মিত সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সবকিছু জেনেও চুপ রয়েছেন। ইতিমধ্যে এই দু’জন বেতন-ভাতাদি বাবদ ৩২ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ছোট পূত্র শামীম ফোন ধরে বলেন, কি বলার আছে আমাকে বলেন। আমার বাবাকে ফোন দিতে পারব না।

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী জানান, এই নিয়োগগুলো আমার আমলে হয়নি। প্রয়াত অধ্যক্ষ আব্দুল কুদ্দুছ সাহেবের সময়কার। তবে এই বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আবু বকর সিনিয়র মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি এ্যাড. মুসা মিয়া বলেন, আমি কিছু জানিনা। যার সমস্যা তার সঙ্গে কথা বলেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুল আলম জানান, ২০১৮ সালের বিধি মোতাবেক কেউ ৩৫ বছরের নীচে এবং ৬০ হলে চাকরি করার নিয়ম নেই। তবে এমন অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন জানলাম প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।

এমআই