আলোচনায় মগ্ন ইমরান-হাসিনা!

আলোচনায় মগ্ন ইমরান-হাসিনা!

যেকোনো সভা, সমাবেশ, বক্তৃতা কিংবা আলোচনায় পাকিস্তানকে একহাত নিতে ভুলেননা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। প্রায়ই তাঁকে দেখা যায় দেশটির সমালোচনা করে তুলোধুনো করে দিতে। একিসঙ্গে বাংলাদেশের কারো কারো নাকি পাকিস্তানের সঙ্গে কথিত ঘনিষ্টতা রয়েছে বলে নিন্দা আর তাচ্ছিল্যভরে কথা বলতেও পিছপা হননা তিনি। সেই সভানেত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই এবার দেখা গেলো তাঁর বিরাগভাজন আর বৈরীভাবাপন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরানের সঙ্গে খোশ আলাপে মগ্ন হতে। দ্বিমুখী আচরণের এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা আর সমালোচনা চলছে নেটি দুনিয়ায়। শেখ হাসিনা আর পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাশাপাশি বসা আর আলাপচারিতার ছবিটি ভাইরাল হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)-এর সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংস্থাটির অন্যান্য দেশের সদস্যবৃন্দ।

ওআইসি ১৪তম এই সম্মেলনে যোগ দিতে আসা সকল দেশের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় লালগালিচা সংবর্ধনা প্রদান করেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ।

শুক্রবার (৩১ মে) অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্রের জন্য নির্দিষ্ট চেয়ার রাখা হয়। সম্মেলনে চেয়ারগুলোর আসন বিন্যাসে দেখা যায় বাংলাদেশের পাশেই রাখা হয়েছে পাকিস্তানের চেয়ার। পাশাপাশি দুই দেশের নির্দিষ্ট চেয়ারেই আসন গ্রহণ করতে দেখা যায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে।

আসন বিন্যাসের কারণে পাশাপাশি বসলেও স্বাভাবিক একটা ধারণা ছিলো বৈরি প্রতিবেশি পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের আচরণও বৈরি হবে। আর ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো তাঁর বিভিন্ন বক্তৃতায় পাকিস্তানকে তুলোধুনো করতে ভুলেন না। কিন্তু সম্মেলনে সে চিত্র মোটেও দেখা যায় নি। ছবিতে দেখা যায় শেখ হাসিনা হাসোজ্জ্ব্যলভাবে কথা বলছেন ইমরানের সঙ্গে। ডানপাশ ঘুরে অনেকটা মনযোগ দিয়ে কথোপকথোনে অংশ নেন তিনি।

এবারের ওআইসি সম্মেলনের শ্লোগান ছিলো ‘ভবিষেতের জন্য ঐক্য চাই’। এ সম্মেলনে আগত সব দেশের নেতারা ভাষণ দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ওআইসি’র নিজস্ব সমস্যাগুলো মোকাবেলার সক্ষমতা থাকা উচিত কেননা এটির বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ কৌশলগত সম্পদ এবং এর সিংহভাগ তরুণ-যুবক রয়েছে ।

তিনি এ সময় আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সম্মেলনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমেই জবাবদিহিতা এবং ন্যায় বিচারের প্রশ্নে রোহিঙ্গাদের আইনগত অধিকার নিশ্চিতের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার পথ তৈরী হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রক্রিয়াকে এতদূর এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে আবেদন জানাচ্ছি এই মামলা রুজুর বিষয়ে স্বেচ্ছা তহবিল সংগ্রহ এবং কারিগরি সহযোগিতার জন্য।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্বেও বাংলাদেশ মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ বোহিঙ্গা মুসলমানদের আশ্রয় প্রদান করেছে।

‘কিন্তু তাঁদের সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন এখনো অনিশ্চিত-কেননা উত্তর রাখাইন রাজ্যে এসব রোহিঙ্গাদের ফেরার জন্য যে ধরনের অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন তা সৃষ্টিতে মিয়ানমার তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ধারবাহিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

জিএস/