গৌরনদী থানার ওসি প্রত্যাহার

গৌরনদী থানার ওসি প্রত্যাহার

বরিশাল, ২৭ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : হত্যা মামলার আসামিকে আটকের পর থানা থেকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে বরিশালের গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত অভিযোগের পর তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে তাকে প্রত্যাহার করা হয় বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ সূত্র।

শনিবার জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ওসি মনিরুলকে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। গৌরনদী থানার ওসি (তদন্ত) আফজাল হোসেনকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, গৌরনদী কলেজের ছাত্র সাকির গোমস্তা হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ফাহিমকে আটকের পর টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে গত ২৪ নভেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর আগে ২২ নভেম্বর গৌরনদী থানার ওসি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মফিজুল ইসলামের কাছে অভিযোগ জানান নিহত সাকিরের সহপাঠী-শিক্ষক ও স্থানীয়রা। এরপর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মফিজুল ইসলামকে প্রধান করে সিনিয়র এএসপি (সদর) আবুল বাশার ও ডিবি’র ওসি মো. শাহাবুদ্দিন চৌধুরীকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত ২৫ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় এ কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে ওসি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার সত্যতা পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আরো জানা যায়, গত বছরের ২১ নভেম্বর উপজেলার পালরদী মডেল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের ওপর চড়াও হন স্থানীয় যুবলীগ কর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগের কর্মী ও একাদশ শ্রেণির ছাত্র সাকির গোমস্তা প্রতিবাদ করলে সোহেল গোমস্তা, ইলিয়াছ খান, সুমন হাওলাদার, এমরান মীর ও ফাহিমের নেতৃত্বে যুবলীগের ১০ থেকে ১২ জন কর্মী লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সাকিরকে পেটায়। গভীর রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সাকিরের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের মা আলেয়া বেগম বাদী হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১২ কর্মীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহত সাকিরের মা আলেয়া বেগম ও বড় ভাই জাকির হোসেন বলেন, ২১ নভেম্বর দুপুরে ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা সাকিরের ওপর হামলাকারী ও হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামি ফাহিমকে আটক করে গৌরনদী থানার এসআই শামছুদ্দিনের কাছে সোপর্দ করেন। এরপর ওই এসআই ফাহিমকে থানায় নিয়ে যান। ওসি মনিরুল আসামি ফাহিমকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলে এসআই শামসুদ্দিন আসামিকে ছেড়ে না দিয়ে ডিউটি অফিসারের হাতে তুলে দিয়ে বরিশাল চলে যান। এরপর সন্ধ্যায় থানার ওসি মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে ফাহিমকে ছেড়ে দেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা। পরের দিন এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলেও জানানো হয়।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১৫১৫ঘ.)