যশোরে বাসচাপায় মেধাবী দুই স্কুলছাত্র নিহত

যশোরে বাসচাপায় মেধাবী দুই স্কুলছাত্র নিহত

যশোরের মণিরামপুরে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের চাপায় আশিকুর রহমান ও আল-আমিন নামে মেধাবী দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে যশোর-চুকনগর সড়কের বিজয়রামপুর খইতলা মোড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহত আশিকুর রহমান উপজেলার ধলিগাতী গ্রামের স্কুল শিক্ষক খাইরুল বাসারের ছেলে। আর আল-আমিন জামলা গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে। তারা দু’জনই উপজেলার ধলিগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।

এদিকে দুর্ঘটনায় দুই স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে সহপাঠীরাসহ এলাকাবাসী যশোর-চুকনগর সড়কের সুন্দলপুর বাজারে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনারা জানান, আজ সকাল ৯টার দিকে মণিরামপুর বাজারের একটি কোচিং সেন্টার থেকে প্রাইভেট পড়ে এক সাইকেলে চড়ে বাড়ি ফিরছিল আশিকুর রহমান ও আল-আমীন। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তারা সড়কের বিজয়রামপুর খইতলা মোড়ে পৌঁছলে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস তাদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আশিকুরকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুত্বর আহত আল-আমিনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে বেলা ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আশরাফুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই আশিকুরের মৃত্যু ঘটে। আহত আল-আমিনের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে যশোর সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।

সদর হাসপাতালে পৌঁছানো মাত্রই আল-আমিনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

ধলিগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীলিপ কুমার পাল বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আশিকুর রহমান ও আল-আমিন আমার বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণির ছাত্র। তারা দু’জনে শ্রেণির ফার্স্ট ও সেকেন্ড বয় এবং গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার মত মেধাবী ছাত্র। তাদেরকে হারিয়ে আমরা শোকাহত।

এদিকে দুর্ঘটনায় দুই স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে ও চালক-হেলপারের আটকের দাবিতে সকাল ১০টা থেকে সহপাঠীরাসহ এলাকাবাসী যশোর-চুকনগর সড়কের সুন্দলপুর বাজারে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে। এসময় রাস্তার দুই পাশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়।

খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে থানার ওসি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। পুলিশ দেখে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আন্দোলনকারীরা। পরে ওসির আশ্বাসে রাস্তা থেকে গুড়ি সরিয়ে ফেলা হয়। বেলা ১২টার দিকে যান চলাচল স্বভাবিক হয়।

মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনায় দুই ছাত্র নিহত হওয়ার পর শিক্ষার্থীরাসহ এলাকাবাসী গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে। ফলে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এমজে/