মেয়রের চায়ের দাওয়াতে যাচ্ছেন ৮৮ হাজার রিকশাচালক

মেয়রের চায়ের দাওয়াতে যাচ্ছেন ৮৮ হাজার রিকশাচালক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকনের আমন্ত্রণে নগর ভবনে চায়ের দাওয়াতে যাচ্ছেন ৮৮ হাজার রিকশাচালক। বুধবার সকালে তারা দলবেঁধে মেয়রের চায়ের দাওয়াতে অংশ নেবেন।

তবে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত তারা কেউই নগর ভবন থেকে কোন চিঠি বা ফোন পাননি। টিভি’র ঘোষণা মতেই তারা মেয়রের চায়ের এই দাওয়াত পেয়েছেন। ফোন বা চিঠি পেলে বুধবার মেয়রের চায়ের দাওয়াতে অংশ নিতে চান তারা।

মঙ্গলবার রাত ৮টায় কথা হয় রিকশা মালিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মোন্তাজ মজুমদারের সাথে। তিনি নয়া দিগন্তকে জানান, আমরা অবশ্যই মেয়রের আমন্ত্রণে চায়ের দাওয়াতে অংশ নেবো। তবে এখনো নগরভবন থেকে কোন চিঠি বা টেলিফোন পাইনি।

অন্যদিকে সংগঠনের যুগ্ন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জানান, আশা করছি কালকে (বুধবার) সকালেই আমরা মেয়রের ডাক পাব। আমরা আমাদের দাবি মেয়র মহোদয়ের কাছে তুলে ধরবো। আমরা দাবি করবো বৈধ রিকশা না তুলে রবং অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হোক। আর এই অভিযানে আমরা বৈধ রিকশার মালিক এবং চালকরাও সরকারকে সহায়তা করবো।

তিনি আরো জানান, চালক এবং মালিকরা নগরভবনে গেলেও তারা সবাই বাইরে অবস্থান করবেন। ১০ থেকে ১৫ জনের একটি প্রতিনিধি দলই মূলত মেয়রের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন।

রাজধানীর রিকশা ভ্যান শ্রমিক লীগের সভাপতি ইনসুর আলী রাতে নয়া দিগন্তকে জানান, আমরা এখনো মিটিং করছি। চায়ের দাওয়াতে যাওয়ার জন্য আমরা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে চাই।

তিনি আরো জানান, রাজধানীতে রিকশা নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছেন এটা মূলত অবৈধ রিকশার কারণেই। রাজধানীতে মাত্র ৮৮ হাজার বৈধ রিকশা আছে। অবৈধ রিকশা তুলে দেয়া হলে রিকশার কারণে যে যানজটের কথা বলা হচ্ছে তা আর থাকবে না।

মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে রাজধানীর বৈধ ও লাইসেন্সধারী রিকশাচালক ও মালিকদের নগর ভবনে চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে নগরীর সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বিনিময় শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ আহ্বান জানান।

মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, সবাই মিলে বসে আলোচনা করে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তাই আমি লাইসেন্সধারী রিকশাচালক-মালিকদের নগর ভবনে চায়ের দাওয়াত দিচ্ছি। তাদের আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা আলোচনা করে এ সমস্যার সমাধান করতে পারি।

তিনি আরও বলেন, কুড়িল বিশ্বরোডসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় তারা আন্দোলন করেছে। তাদের সঙ্গে রিকশার মালিক এবং কিছু অচেনা মুখও দেখা গেছে। রাস্তায় রিকশা বন্ধ করা হয়েছিল যানজট কমানোর জন্য। কিন্তু তারা রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করায় পুরো শহর স্থবির হয়ে পড়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক।

মেয়রের অফিস সূত্র মঙ্গলবার রাতে জানায়, রিকশা চালক এবং মালিকদের সংগঠনকে মেয়রের চায়ের আমন্ত্রনে আলাদা কোন চিঠি বা পত্র দেয়া হবে না। মেয়র মহোদয় মঙ্গলবার যে ঘোষণা দিয়েছেন সেটিই চূড়ান্ত দাওয়াত। রিকশার চালক এবং মালিকরা আসলে আলোচনার মাধ্যমেই মেয়র সমস্যার সমাধান করতে চান।

উল্লেখ্য মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর কুড়িল-রামপুরা-মালিবাগ সড়কের বিভিন্ন অংশ অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন রিকশাচালকরা। এর ফলে প্রগতি সরণি সারা দিনই থমকে ছিল। মালিবাগ রামপুরা হয়ে নতুন বাজার পর্যন্ত সড়কে যানবাহন স্থবির হয়ে ছিল। আর এর প্রভাব পড়ে পুরো রাজধানীতে। চরম ভোগান্তিতে পড়েন অনেকে।

এমজে/