রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : সরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত ও গেজেটভুক্ত থাকা অবস্থায় বরাদ্দ দেয়া এবং ওই সম্পত্তি আত্মসাৎ করার অভিযোগে রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার মতিঝিল থানায় মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সেলিনা আখতার। মামলার আসামীরা হলেন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন খাদেম, রাজউকের সাবেক উপ-পরিচালক আব্দুর রহমান ভুঞা, আমির হোসেন, একে এম সহিদুজ্জান, কামরুন নেছা, মো. মোশারফ হোসেন, মো. জাকারিয়া চৌধুরী ও মো. মশিয়ার রহমান।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পিপলস জুট মিলসের নামে গুলশান মডেল টাউন এ ৮৩ নম্বর রোডের এনই, জি ৬নম্বর প্লটের ৪৮ দশমিক ৬০ শতাংশ মালিকানা পিপলস জুট মিলস খালিশপুরের নামে বরাদ্ধ দেয়া হয়। যখন প্লটটি বরাদ্ধ ও রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করা হয় তখন দেশ স্বাধীন হয়নি এবং ওই সময় পিপলস জুট মিলের মালিক ছিলেন প্রিন্স করিম আগাখান। তিনি অবাঙ্গালী থাকার কারণে ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পরে প্রেসিডেন্টের এক আদেশে অবাঙ্গালীদের জমি, জমি, মিল কারখানাসহ সকল সম্পত্তি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসাবে ঘোষণা করা হয়।

ওই সম্পত্তিও পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্টের আদেশে খুলনার পিপলস জুট মিলসসহ অবাঙ্গালীদের সম্পত্তির মধ্যে কিছু মিল কারখানা রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়। সেই অনুসারে পিপলস জুট মিলসের অন্যান্য সকল সম্পত্তির সঙ্গে তাদের গুলশানের প্লটটি রাষ্ট্রীয়করণ হয়ে যায়। কিন্তু অজানা কারণে খুলনার পিপলস জুট মিলের কারখানাসহ অন্যান্য সম্পত্তি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হিসাবে পরিগণিত হলেও শুধুমাত্র এনই,জি ৬ নম্বর প্লটটি মন্ত্রণালয় থেকে অবমুক্ত করা হয়নি।

এজাহারে আরো বলা হয়, রাজউকের উপ-পরিচালক আব্দুর রহমান ভুঞার সাক্ষরিত পিপলস জুট মিলের স্থানে এম এস জুট মিলস খালিশপুর খুলনার ঠিকানা ব্যবহার করে উক্ত প্লটের বরাদ্ধ বাতিলের চিঠি দেয়া হয়। রাজউকের ওই চিঠিতে নির্ধারিত সময়ে ইমারত নির্মাণ না করার কারণে প্লটের বরাদ্ধ বাতলের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এমনকি পিপলস জুট মিলের নামে প্লট বরাদ্দের নথি গোপন করে রাজউক কর্তৃপক্ষ প্লটটি তাদের দখলে নিয়ে পূর্বের বরাদ্ধের সকল আলামত মুছে ফেলা হয়।

পরে সম্পত্তিকে চারভাগে ভাগ করে আমির হোসেন, মো. মোশারফ হোসেন, মো. জাকারিয়া চৌধুরী ও মো. মশিয়ার রহমানের নামে বরাদ্ধ দেয়া হয়। আমির হোসেনের জমি তার কাছ থেকে পরবর্তীতে একে এম সহীদুজ্জান ও কামরুননেছা ক্রয় করেন। আসামীগন বিতর্কিত ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি জেনেও নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্য রাজউকের কর্মকর্তাদের প্রলুব্ধ করে তাদের যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন। তালিকাভুক্ত ও গেজেটভুক্ত থাকা অবস্থায় ওই সম্পত্তিটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা হতে অবমুক্ত না করে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্ধ করার ক্ষমতা রাজউকের নাই। তাই তারাও এই কাজে সহযোগিতা করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় দুদক এই মামলা করে।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯১৬ঘ.)