বগুড়ায় যমুনার পানি বিপদ সীমার ১১৭ সেন্টিমিটার উপরে

বগুড়ায় যমুনার পানি বিপদ সীমার ১১৭ সেন্টিমিটার উপরে

ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে আসা ঢলে বগুড়ার তিনটি উপজেলা বন্যা পরিস্থির আরও অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবারের পর বুধবার আরও একধাপ সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

নতুন করে আরও বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার ১০০ সেন্টিমিটার থাকলেও বুধবার যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপদ সীমার ১১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সাথে সারিয়াকান্দিতে বাঙালী নদীর পানিও বিপদ সীমা ছুঁই ছুঁই করছে। বাঙালী নদীর পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে।

বুধবার তিন উপজেলায় নতুন করে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় মোট ২০ হাজার ২৫টি পরিবারের ৮২ হাজার ৩৮০ জন মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বন্যা কবলিত চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। পরিবারের সদস্যরা বন্যার পানির মধ্যেই বাঁশ, টিন দিয়ে উচুঁ করে মাচা তৈরি করে আশ্রয় নিয়ে আছে। সেখানে সুপেয় পানির অভাব রয়েছে। কিছু কিছু ত্রাণ পেলেও পরিবারগুলো অনিরাপদ হয়ে আছে। চরাঞ্চলের অনেকে পরিবার বসতবাড়িতে ঘরের মাচা উঁচু করে বিনিদ্র রজনী পার করছেন। প্রায় ২ হাজার পরিবার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।

বগুড়া জেলা প্রশাসকের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তা আজাহার আলী মন্ডল জানান, এখন পর্যন্ত সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সোনাতলা উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত হয়েছে ১০২টি গ্রাম। প্রায় ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। সারিয়াকান্দিতে ৪৬, ধুনটে ৫টি ও সোনাতলা উপজেলায় ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যা কবলিত হয়েছে। মোট ৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আপাতত বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্কুল আছে ১১টি। পানি বিশুদ্ধকরণে ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার। নতুন করে আরও ৫০০ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা এবং ১০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার এর চাহিদা নতুন করে প্রেরণ হয়েছে। ত্রাণ হিসাবে সারিয়াকান্দি উপজেলায় ২৫১ মেট্রিক টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

যমুনা তীরবর্তী বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার, সাড়ে ৩০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। ধুনট উপজেলায় ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খবার ও ৩২২ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে বাঙালী নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পরে। তার জন্যও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কর্মকর্তারা সজাগ আছে। আর যমুনা নদীর পানি বুধবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে বৃদ্ধির কারণে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপদ সীমার ১১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাঁধ এলাকায় সার্বক্ষণিক পরিদর্শন করা হচ্ছে।

এমজে/